দৈনিক সংগ্রাম এর খুলনা অফিসে হামলার ৬ষ্ঠ বর্ষপূর্তি আজ। ২০১৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর বেলা ১১ টার দিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে অতর্কিতে নগরীর স্যার ইকবাল রোডস্থ খুলনা প্রেসক্লাব সংলগ্ন দৈনিক সংগ্রাম এর খুলনা অফিসে দরজা ও তালা ভেঙে ঢুকে নির্বিচারে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।
হামলাকারীরা প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে অফিসে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এ সময় আতংকে এলাকার দোকান-পাট বন্ধ হয়ে যায়। আশেপাশের ব্যবসায়ীরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, তৎকালীন মহানগর ছাত্রলীগের ২৫/৩০ জন নেতাকর্মী হামলায় অংশ নেয়। তারা এক পর্যায়ে দৈনিক সংগ্রামের খুলনা বিভাগীয় প্রধান আব্দুর রাজ্জাক রানাকে খুঁজতে থাকে। তারা হকিস্টিক, হাতুড়ি, রড-লাঠি দিয়ে একে একে অফিসের আসবাবপত্র ব্যাপক ভাংচুরসহ অফিসে রক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র তছনছ ও টেবিলের ড্রয়ারে থাকা নগদ কয়েক হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পত্রিকা অফিসের ভেতরে তারা ঘণ্টা খানেক ধরে তান্ডব চালায়। পুনরায় শ্লোগান দিতে দিতে চলে যাওয়ার সময় বাড়িওয়ালাকে দৈনিক সংগ্রাম অফিস বন্ধ করে সাইনবোর্ড খুলে ফেলার হুমকি দিয়ে যায়। ফলে মাসের মাঝামাঝি হওয়া সত্ত্বেও দৈনিক সংগ্রাম কর্তৃপক্ষ অফিস ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
এ ব্যাপারে খুলনা সদর থানায় মামলা বা জিডি পর্যন্তও করতে দেয়নি। উপরন্ত খুলনা বিভাগীয় প্রধান আব্দুর রাজ্জাক রানাকে একাধিকবার গ্রেপ্তারের জন্য বাসাবাড়িতে অভিযান চালায়।
এমন একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা খুলনা প্রেসক্লাব সংলগ্ন পত্রিকা অফিসে ঘটলেও তৎকালীন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ কোন প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি। আবার অনেকেই এ ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
এ ব্যাপারে দৈনিক সংগ্রামের খুলনা বিভাগীয় প্রধান আব্দুর রাজ্জাক রানা বলেন, অফিসে হামলার পর আমি ব্যক্তিগতভাবে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি। পুলিশ প্রায়শই আমাকে খোঁজ করতেন। মোবাইল চেঞ্জ করে পালিয়ে থাকতাম। একদিন ভোরে পুলিশ আমাকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদ করে তৎকালীন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের সহ-সভাপতি মো. রাশিদুল ইসলাম ও নির্বাহী সদস্য এইচ এম আলাউদ্দিনের অনুরোধে থানা থেকে ছেড়ে দেন। এরপর আমি বাসা পরিবর্তন করে অন্যত্রে চলে যাই। একজন সংবাদকর্মী এভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে পালিয়ে থাকা খুবই কষ্টকর। আমি বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।
খুলনা গেজেট/এনএম

