অবশেষে আদালতের রায়ে স্থানীয় ভূমিদস্যুর হাত থেকে ফিরলো কপিলমুনি ভরত চন্দ্র হাসপাতালের জমি। গত ১৭ নভেম্বর পাইকগাছা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলার রায় দেন বিচারক। আর এ রায়ের ফলে হাসপাতালের জায়গা পুনঃউদ্ধার পূর্বক ফিরলো মানবিকতা।
১৯১৫ সালের ৭ এপ্রিল রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু কপিলমুনি ভরতচন্দ্র হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। আর সেখান থেকে ১১০ বছরের অধিক সময় ধরে কপিলমুনি, হরিঢালী ও লতা ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ এই দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি থেকে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে এসে নাছিরপুর নিবাসী জয়নদ্দীন গাজী বিগত ২০২১ সালের ২৪ এপ্রিল পাইকগাছা সিনিয়র জজ আদালতে খুলনা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), ব্যবস্থাপক ভরতচন্দ্র হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন খুলনাকে বিবাদী করে হাসপাতালের দখলীয় ১১ শতক জমির মালিক দাবি করে আদালতে মামলা করে। এটি মাত্র হাসপাতালের দখলকৃত কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ গ্রাস করার অপপ্রয়াস মাত্র।
এ ব্যাপারে অত্র এলাকার একাধিক প্রবীণ ব্যক্তিগণ বলেন, “কপিলমুনি মৌজায় অবস্থিত ভরত চন্দ্র হাসপাতালের দখলীয় এসএ ১৮ নং খতিয়ানের ৭৭ দাগের ১১ শতক জমি চারু চন্দ্র গংরা রেকর্ডীয় মালিক ছিলেন। উক্ত রেকর্ডীয় মালিকগণ ১৯৮৫ সালে নিলাম খরিদ করেন। ৮৬ সালে আদালতের মাধ্যমে দখল গ্রহণ করেন। ৯৭ সালে মামলার বাদী মামলা করেন।
তারা আরও বলেন, “রায় সাহেব উক্ত হাসপাতাল স্থাপনের সময় একই দাগের অন্য অংশের পাশে অবস্থিত চারু চন্দ্র গংদের শরণাপন্ন হয়ে উক্ত ১১ শতক সম্পত্তি মৌখিকভাবে গ্রহণ করে উক্ত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। সম্প্রতি হাসপাতালটি ২০ শয্যায় উন্নীত হওয়ায় প্রায় ১৭ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ দৃশ্যমান। কপিলমুনি ভরতচন্দ্র হাসপাতালের বর্তমান আধুনিকায়নের যে অবকাঠামো ও নির্মাণ কাজ চলছে তা অত্যন্ত দৃষ্টি নন্দন। যেখানে থাকছে আউটডোর পাঁচটি চেম্বার, জরুরি বিভাগ, আই সি ইউ বিভাগ, অপারেশন থিয়েটার, এক্সরে বিভাগ, প্যাথলজি বিভাগ, ফার্মেসি বিভাগ, ভিআইপি কেবিন, ২০ বেড, দুই তলা ভবনের ডাক্তারের আবাসিক কোয়ার্টার, ত্রিতল ভবনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর কোয়ার্টার, দ্বিতিয় তলায় ভবনের অ্যাম্বুলেন্স চালকের আবাসিক কোয়ার্টার, বিদ্যুতের সাব স্টেশন, হাসপাতাল চত্বরে আরসিসি সড়ক, দৃষ্টি নন্দন ফুলবাগান, সুদৃশ্য দুটি গেটসহ সীমানা প্রাচীর। কিš সর্বশেষ উক্ত মামলার কারণে থমকে যায় হাসপাতালের অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ। তবে গত ১৭ নভেম্বর পাইকগাছা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলার আদেশে রায় দেন আদালত।
খুলনা গেজেট/এনএম

