শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। সন্ধ্যা নামলেই শীতের হিমেল পরশ গায়ে লাগতে থাকে। কিছুটা উষ্ণতা পেতে ভোজন রশিকরা ছুটছেন নগরীর অলিগলিতে গড়ে ওঠা পিঠা পুলির দোকানে। আর তাদের ভিড় সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন দোকানিরা।
শান্তিধাম তারের পুকুর মোড়, সাতরাস্তা মোড়, ময়লাপোতা মোড়, পিটিআই এবং নিরালামোড়সহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে অ¯ায়ী পিঠার দোকান। কেউ বিক্রি করছেন ভ্যানে আর কেউ বিক্রি করছেন দোকানে। দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোজন রশিকদের ভিড় লেগে থাকে এসব পিঠা পুলির দোকানে।
নগরীর শান্তিধাম তারের পুকুরের বিপরীতে দেখা মেলে পিঠা বিক্রেতা মাসুদের সাথে। একসাথে পাঁচটি চুলা জ¦ালিয়ে পিঠা বিক্রি করছেন তিনি। পিঠা তৈরির প্রধান উপকরণ হিসেবে আতপ চালের গুড়া লাগে প্রতিদিন ৫০ কেজি। এছাড়া রয়েছে সুস্বাদু খেজুরের গুড়। সাথে রয়েছে ধনে পাতার মিশ্রণে শস্যে বাটা। দূর থেকে বাতাসে ঘ্রাণ ভাসতে থাকে।
পিঠা বিক্রেতা মাসুদ খুলনা গেজেটকে বলেন, বাপ-দাদার ব্যাবসা এটা। শীত এলেই ব্যস্ততা বেড়ে যায়। বাবার মৃত্যুর পর ব্যাবসার হাল ধরে রেখেছেন তিনি। আতপ চালের সাথে পোলাও চালের মিশ্রণে তিনি চিতই পিঠা, পান পিঠা (তেলে ভাজা), ঘি ও সন্দেশের সংমিশ্রণে পাটি সাপটা এবং ভাপা পিঠা তৈরি করেন তিনি। এসব পিঠার প্রতিপিস ৫, ১০ এবং ২০ টাকায় বিক্রি করেন তিনি। দুপুর ৩ টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দোকানে ভিড় থাকে। সীমিত লাভ হলেও ভোজন রশিকদের কছে পিঠা বিক্রি করে খুশি হন তিনি।
সাতরাস্তা মোড়ের পিঠা ব্যবসায়ী নুরুল আমিন। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এ ব্যাবসা করছেন। শীতের আমেজ শুরু হওয়ার সাথে সাথে তার পিঠা তৈরি ও বিক্রির ব্যস্ততা বেড়ে যায়। তার হাতের তৈরি বিভিন্ন রকমের সুস্বাদু পিঠা খেতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে থেকে ছুটে আসেন ভোজন রশিকরা। পিঠা বিক্রির সময় বিভিন্ন ধরনের উপদান ব্যবহার করেন তিনি। প্রতিদিন পিঠা বিক্রি করে গড়ে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা লাভ হয় তার।
পিটিআই মোড়ে কথা হয় আরও একজন পিঠা বিক্রেতা শহীদুলের সাথে। তিনি জানান, “দিনে রিকশা চালিয়ে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হয়।” তাই বাড়তি অর্থ আয়ের জন্য বিকল্প ব্যাবসা হিসেবে সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি করেন তিনি।
ক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন, “শীত এলেই শৈশবের কথা মনে পড়ে যায়। মায়ের হাতে তৈরি পিঠার স্বাদ ভুলতে পারিনা। শীতের উষ্ণতা কাটাতে পিঠা পুলির দোকানে আসতে হয় তাকে। তাছাড়া ইট-পাথরের দেওয়ালের ভেতরের বউরা এখন কষ্টের কাজ যেন করতে চায়না। খেতে চাইলে সোজা পিঠার দোকান দেখিয়ে দেয়। তাই সন্ধ্যায় তারের পুকুরের বিপরীতে তার আসা।”
খুলনা গেজেট/এনএম

