শনিবার । ১৫ই নভেম্বর, ২০২৫ । ৩০শে কার্তিক, ১৪৩২
তিনদিনেও সন্ধান মেলেনি মিঠুনের, ট্রলার জব্দ

নদীতে ডুবে নিখোঁজ যাত্রী : পকেট ভারি মাঝি সংঘের সম্পাদকের!

নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্রলার থেকে পড়ে রূপসা নদীতে নিখোঁজ মহিদুল হক মিঠুনের সন্ধান গত তিন দিনেও মেলেনি। নদীর উপরিভাগে নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও নৌপুলিশ দিনভর অভিযান চালিয়ে খালি হাতে ফিরে এসেছে। এদিকে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রলার জব্দ করে রূপসা নৌপুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। ট্রলার চালক আসাদুল রয়েছে আত্মগোপনে। এদিকে মাঝি সংঘের বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারেজ হাওলাদারের নেতৃত্বে রূপসা ঘাট অনিয়মের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ সাধারণ মাঝিদের। এমনকি মহিদুল হক মিঠুনের মৃত্যুকে পুঁজি করে হারেজ হাওলাদার পকেট ভারি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত ৯ নভেম্বর রাত ১১টায় নগরীর কর্মস্থল থেকে রূপসার তালিমপুরের বাড়ি ফিরছিলেন মহিদুল হক মিঠুন। রূপসা ঘাট পারাপারের সময় পূর্ব রূপসা প্রান্তে ট্রলার ভেড়ানোর সময় চালকের খামখেয়ালীপনায় নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয় মিঠুন। ওই রাতেই ট্রলারটি জব্দ করে রূপসা নৌপুলিশ। ঘটনার পর পরই নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস তল্লাশি অভিযান শুরু করে। পরদিন ১০ নভেম্বরও সকাল থেকে শুরু হয় ফের তল্লাশি অভিযান। এদিকে অভিযানিক দলকে ট্রলার দেওয়াসহ বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে মাঝি সংঘের সাধারণ সম্পাদক হারেজ হাওলাদার ওই দিন শতাধিক ট্রলারে ট্রিপ দিয়ে অর্থ আত্মসাত করে।

সাধারণ মাঝিদের দেওয়া তথ্যমতে, হারেজ হাওলাদারের আত্মীয়-স্বজনের ট্রলারগুলিতে প্রতি ট্রিপে ৩৫ থেকে ৪০ জন করে যাত্রী পারাপার করে। এছাড়া ঘাটে যাত্রী পারাপারে হারেজ রীতিমত অনিয়মের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছে। মাঝি সংঘের সভাপতি হালিম চৌকিদার পারিবারিক কাজে মাদারিপুর থাকার সুযোগে সাধারণ সম্পাদক হারেজ খামখেয়ালিপনা বেশি করছে বলে অভিযোগ মাঝিদের। ৯ নভেম্বর রাতে যে ট্রলার দুর্ঘটনা ঘটায় তার মাঝি আসাদুল হারেজের শ্যালক। সে একজন মাদকসেবী বলে জানান ঘাটের মাঝিরা। এদিকে ট্রলার থেকে নদীতে পড়ে একজন যাত্রী নিখোঁজ হওয়ার পরও থেমে নেই অনিয়ম। প্রায় ট্রলারে শিশু শ্রমিক ব্যবহার করা হচ্ছে। রাত ৯টার পর থেকে বেশিরভাগ ট্রলারের নিয়ন্ত্রন থাকে মাদকসেবী কিশোর গ্যাংয়ের হাতে। কোন ট্রলারই ব্যবহার করেনা বাতি। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন একাধিকবার রাতে ট্রলারে বাতির বিষয়ে তাগিদ দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। নদী পারাপারে নিয়মিত যাত্রীদের প্রশ্ন, এসব অনিয়ম দেখার কি কেউ নেই। এদিকে, এসকল অনিয়মের বিষয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ এক অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছে।

উল্লেখ্য, মাঝি সংঘের সাধারণ সম্পাদক গেলো নির্বাচনে ভোটের ফলাফলে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর সাথে ড্র হয়। পরবর্তীতে ওই পদে পুনরায় নির্বাচন বা কোন লটারি পদ্ধতি না করে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের তৎকালিন এমপি সালাম মূর্শেদীর নির্দেশে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ার দখল করে হারেজ।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন