বুধবার । ৫ই নভেম্বর, ২০২৫ । ২০শে কার্তিক, ১৪৩২

স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত বানীশান্তাবাসী

বাজুয়া প্রতিনিধি

চিকিৎসা সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে তৈরি করা হয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র। যার সুবিধাও পেতে থাকে অসহায় ও হতদরিদ্র সেবাগ্রহীতারা। কিন্তু দাকোপের বানীশান্তা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র এখন নিজেই রুগ্ন ও জরাজীর্ণ। বন্ধ আছে এ সেবা কেন্দ্রের সকল কার্যক্রম। ফলে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাজারো মানুষ।

খুলনা জেলার প্রত্যন্ত এলাকার এই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। এতে চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে ইউনিয়নবাসী। কবে মিলবে সেবা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আধুনিক সেবা পেতে ২৫ কিলোমিটার এবং একটি নদী পাড়ি দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে হচ্ছে তাদের। দ্রুত সমস্যা সমাধান করে চিকিৎসাসেবা চালুর দাবি ইউনিয়নবাসীর।

জানা যায়, প্রত্যন্ত এ ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে জনসংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ইউনিয়নের আমতলা গ্রামে অবস্থিত এবং এর পাশেই বানীশান্তা বাজার। এখন এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবনের ছাদ থেকে পলেস্তরা খসে পড়া ও দেয়ালে ফাটল ধরায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নব্বই দশকে নির্মিত এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কার্যক্রম প্রায় ১৫ বছর যাবৎ বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় গত প্রায় ৫ বছর আগে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি তালাবদ্ধ হয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। আধুনিক সেবা পেতে তাদের প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে হয়। এতে সময় বেশি লাগার পাশাপাশি হয়রানি হতে হয় এবং বাড়তি অর্থ খরচ হয়ে থাকে। নতুন ভবন নির্মাণ করা সহ দ্রুত স্বাস্থ্যসেবা চালু করার দাবি ইউনিয়নবাসীর।

স্থানীয় বাসিন্দা রহিম শেখ বলেন, “আগে সপ্তাহে ৪-৫ দিন আমরা সেবা পেতাম। কিন্তু ১৫-২০ বছর থেকে সেবার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।” তিনি আরও বলেন, “অনেক গরীব মানুষ অর্থাভাবে তার মুমূর্ষু রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে পারেনা। উপজেলায় যাওয়ার সময় রাস্তায় রোগী মারা যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।”

এ বিষয়ে বানীশান্তা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুদেব কুমার রায় বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পর থেকেই চিকিৎসাসেবা বেহাল অবস্থা। প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় ইউনিয়নবাসীদের চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। তারপরও সেবা চালু রাখতে আমার পক্ষ থেকে গর্ভবতী মায়েদের সেবা দেওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পাসে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক ও খেজুরিয়া গ্রামে আরও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

তিনি বলেন ইউনিয়নবাসীর চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য নতুন বিল্ডিং ও জনবল দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে। কিন্তু অনেক বছর যাবৎ এ বিষয়ে কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে আমি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি যাতে করে দ্রুত এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির ভবন নির্মাণ সহ স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুত করা হয়।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন