বুধবার । ৫ই নভেম্বর, ২০২৫ । ২০শে কার্তিক, ১৪৩২

খানাখন্দে ভরা ডুমুরিয়ার গফ্ফার সড়ক

হুমায়ুন কবীর খান, উঃ ডুমুরিয়া

জলাবদ্ধতা কিছুটা কমেছে। কিন্তু জনদুর্ভোগ কমেনি। ডুমুরিয়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্রের অন্যতম সংযোগ সড়ক ডুমুরিয়া সদর চৌরঙ্গী মোড় থেকে থুকড়া পর্যন্ত গফ্ফার সড়ক এখন যেন এক দুঃসহ যন্ত্রণার নাম। পুরা সড়ক জুড়ে খানা-খন্দে ভরা, এবড়ো থুবড়ো পথ। কোথাও পিচ উঠে গেছে। কোথাও তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। চলতি বর্ষা মৌসুমে সড়কের প্রায় ৮০ ভাগ অংশ তলিয়ে যাওয়ার পর থেকে এ সড়কটি এখন সম্পূর্ণভাবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

একসময় এ সড়কই ছিল উত্তর ডুমুরিয়ার মানুষের আশা-ভরসা। সাবেক মন্ত্রী (বীর উত্তম) এইচ. এম এ গফ্ফারের উদ্যোগে নির্মিত হয় এই সড়ক। নির্মাণের পর ডুমুরিয়া সদরের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ সহজ হয়েছিল। ধামালিয়া, রঘুনাথপুর, রংপুর ও রুদাঘরা ইউনিয়নের হাজারো মানুষ এই পথ দিয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। কৃষকের উৎপাদিত ধান, মাছ ও অন্যান্য ফসল বাজারজাত করার প্রধান মাধ্যম ছিল এই সড়ক।

কিন্তু এখন সেই সড়ক দুর্ভোগের প্রতীক। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গিয়ে পিচ উঠে যাওয়ায় সড়কের কোথাও কোথাও এমন বড় গর্ত তৈরি হয়েছে যে, ইজিবাইক, ভ্যান কিংবা মোটরসাইকেল চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অনেক সময় রোগী বা স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভোগান্তিতে পড়ে। বিশেষ করে বিল পাটিয়ালা, দেড়ুলি, কৃষ্ণনগর, বটবেড়া ও বারানশি এলাকার মুমূর্ষু রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া এখন এক কঠিন যাত্রা।

শাহপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ব্যবসায়ী এস এম রবিউল ইসলাম বাবলু বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এখন সড়কের অবস্থা এমন যে মানুষ বাধ্য হয়ে কাদা-মাটির ওপর দিয়েই চলাচল করছে। দ্রুত সংস্কার না হলে জনদুর্ভোগ চরমে উঠবে।

ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্পাদক শফিকুল ইসলামও একই দাবি করেন। তাঁর ভাষায়, সড়কের এমন বেহাল দশা আগে কখনও দেখিনি। গ্রামের মানুষ এখন কষ্টে দিন পার করছে। প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ দরকার।

তবে এই দুরবস্থার মাঝেও মানবিক উদ্যোগের নজির রেখেছেন ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ শাহজাহান জমাদ্দার। চলতি বছরের শুরুতে তিনি নিজ উদ্যোগে ইট ফেলে সড়কের খানাখন্দ কিছুটা মেরামত করেছিলেন। এতে কিছুদিনের জন্য ছোট যানবাহন চলাচল করতে পারলেও বর্ষার পানি নামার পর সেই ইটও এখন কাদার নিচে মিলিয়ে গেছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী দারুল হুদা জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। স্থানীয়দের প্রত্যাশা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন