দাকোপের বটবুনিয়া এলাকায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি। ভেসে গেছে মাছের ঘের ও পুকুর। ক্ষতি হয়েছে রোপা আমন ধান ও সবজির ক্ষেত। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ অর্ধ কোটি টাকা।
দাকোপ উপজেলা প্রশাসন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্র জানায়, উপজেলার তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বটবুনিয়া এলাকার ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙে ৬ টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে সেখানকার দু’শতাধিক পরিবারের কাঁচা ও আধা পাকা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উপজেলা কৃষি দপ্তর জানায়, ভাঙনে প্লাবিত হওয়ায় মাঠে থাকা ৩শ’ হেক্টর জমির আমন ধানের কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ২ হেক্টর জমির ফসল সম্পুর্ণরূপে নষ্ট হয়েছে। এছাড়া বসত বাড়ির ২ হেক্টর জমির সবজি খেতের ফসল নষ্ট হয়েছে। কৃষি বিভাগের হিসেব মতে সেখানে প্রায় ১১ লাখ টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য দপ্তরের তথ্য মতে, প্লাবিত এলাকায় ১ হাজার একর জমির মাছের ঘের ও পুকুর ভেসে গেছে। ফলে সেখানে থাকা মিঠা পানির গলদা, বাগদা, কার্ব জাতীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, ভেটকি, পার্শ্বে ও ভাঙাল মাছ চলে যাওয়ায় মৎস্য চাষীরা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমত হোসেন বলেন, “প্লাবিত এলাকায় লোকালয় থেকে পানি বের হয়ে যাওয়ার গেটগুলো সচল থাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি। ফলে পানি প্রবেশের সাথে সাথে ভাটায় সেটি আবার বের হয়ে গেছে। যে কারণে ক্ষতির পরিমাণ অনেক কম হয়েছে। অপরদিকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উপজেলা প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে ১২০ পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, তেলসহ খাবার সামগ্রী বিতরণ করে। এছাড়া ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দে চিড়া গুড়সহ শুকনো খাবার বিতরণ করে। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে পরিবার প্রতি ২০ কেজি হারে ২শ’ পরিবারের মাঝে ৪ টন চাল বিতরণ করা হয় বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকী নদীর পানির তোড়ে বটবুনিয়া এলাকার আনুমানিক ২শ’ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ ঘটনায় ইউনিয়নের উত্তর কামিনীবাসিয়া, বটবুনিয়া, নিশানখালী, আড়াখালী, দক্ষিণ কামিনীবাসিয়া, ভাদলা বুনিয়া, মশামারী, গড়খালী ও কাঁকড়া বুনিয়া এলাকা কমবেশি প্লাবিত হয়। ২ দিন পর বৃহস্পতিবার রাতে বিকল্প বাঁধ নির্মাণ করলে এলাকা পানি মুক্ত হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম

