রাত তখন নীরব। তেরখাদা উপজেলা সদরের কাটেঙ্গা বাজারে দোকানপাট বন্ধ হতে শুরু করেছে। ঠিক সেই সময়েই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৌঁছে যায় যৌথ বাহিনীর একটি টিম। মুহূর্তেই শুরু হয় অভিযান। সরকারি ওএমএসের বস্তায় ভরা আটা তখন অন্য বস্তায় ভরে পাচারের প্রস্তুতি চলছে—এমন অবস্থায় হাতেনাতে ধরা পড়েন হামিম বিল্লাহ।
তিনি মেসার্স নাসিমা এন্টারপ্রাইজের মালিক ও সরকারি ওএমএস ডিলার শফিক বিল্লাহর বড় ভাই। মঙ্গলবার রাতের ওই অভিযানে চার বস্তা সরকারি আটা জব্দ করে যৌথ বাহিনী।
তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, “গরিব মানুষের জন্য বরাদ্দ সরকারি ওএমএসের আটা পাচারের চেষ্টা চলছিল। যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে হামিম বিল্লাহকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেন। তবে ডিলার শফিক বিল্লাহ অভিযানের খবর পেয়ে পালিয়ে যান।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারি খাদ্যদ্রব্য পাচারের অভিযোগে মামলা হয়েছে। জব্দকৃত আটা থানায় রাখা হয়েছে, আর পলাতক ডিলার শফিক বিল্লাহকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা পূরবী রানী বালা জানান, “ডিলার শফিক বিল্লাহ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ ছিলেন। তার অনুপস্থিতিতে তার ভাই হামিম বিল্লাহ ব্যবসা পরিচালনা করতেন। অভিযানের সময় আমরা সেখানে উপস্থিত হই এবং সরকারি ওএমএসের বস্তা পরিবর্তনের প্রমাণ পাই। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে তেরখাদা থানায় মামলা করেছি।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি ওএমএসের আটা বাইরে বিক্রি হচ্ছিল। দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত এই আটা বাজারে চলে যাওয়ায় ক্ষোভ জমে উঠেছিল এলাকায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাতুল আফরোজ স্বর্ণা জানিয়েছে, সরকারি খাদ্য সহায়তা নিয়ে কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি সহ্য করা হবে না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

