মঙ্গলবার । ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ । ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২

সোলার ফুল তৈরি করে স্বাবলম্বী কারুশিল্পী হরিদাশ গোলদার

সুব্রত কুমার ফৌজদার, ডুমুরিয়া

প্রতিবছর লক্ষ্মী পূজাকে ঘিরে সোলার ফুল তৈরি করে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা আয় করেন কারুশিল্পী হরিদাশ গোলদার। তিনি কৃষি কাজের পাশাপাশি অবসর সময় ফুল তৈরি করেন। কৃত্রিম সোলার ফুল বিক্রি করে আর্থিকভাবে এখন বেশ স্বাবলম্বী হয়েছেন কারিগরি শিল্পী হরিদাশ। সে ডুমুরিয়া উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল শুক্রবার সকালে ডুমুরিয়া বাজারে ফুল বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন তিনি। পথিমধ্যে কালিকাপুর নতুনরাস্তা মোড়ে খুলনা গেজেট প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় হরিদাশের।

তার দেওয়া তথ্যমতে, প্রতিবছর লক্ষ্মী পূজাকে ঘিরে বিভিন্ন হাট বাজারে সোলার ফুলের বেশ কদর হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, সোলার তৈরি বিভিন্ন মালা ও ফুল হাটবাজার শোভা বর্ধন করে। সোলার ফুল লক্ষ্মী পূজার অন্যতম প্রধান এবং দেবীর আসনে ঝোলানোর জন্য সোলার ফুলের মালা অপরিহার্য উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া পূজার আয়োজনকেও শৈল্পিক ও সুন্দর করতে সোলার ফুলের উপর বেশি গুরুত্ব দেয় গৃহকর্তারা। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে লক্ষ্মী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। যে কারণে এ ফুলের চাহিদা অনেকটা বেশি।

দুর্গাপূজার পাশাপাশি লক্ষ্মীপূজা, ধান সংক্রান্তি, কালীপূজা, ঘটপূজা ও মাঘী পূর্ণিমায় সোলার ফুলের চাহিদা বেশি থাকে। আগামী সোমবার অনুষ্ঠিত হবে লক্ষ্মী পূজা। এ পূজাকে সামনে রেখে কারুশিল্পীরা বাহারি নকশায় সোলার ফুল তৈরি করে বাজারে খুচরা ও পাইকারি বিক্রির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা এ পূজাকে ঘিরে ভাদ্র মাসে বিলডাকাতিয়া, মনিরামপুর, সুজাতপুর, হাজিরহাট, সুন্দলী, জামিরা, পিপরাইল, টোলনাসহ বিভিন্ন বিল থেকে সোলা সংগ্রহ করে কয়েকদিন রোদে শুকিয়ে পূজার উপকরণ হিসেবে মজুত করে রাখে।

কারুশিল্পী হরিদাশ গোলদার জানান, তিনি কৃষি কাজের ফাঁকে অবসর সময় সোলা সংগ্রহ ও ফুল তৈরি করে সিজনে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা আয় করেন। বাজারে সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধির কারণে এ বছর সোলার ফুলের দাম তুলনামূলকভাবে অনেকটা বেশি হবে বলে মনে করেন তিনি। ৪০ থেকে ৩০০ টাকা বা তারও বেশি দামের ফুল রয়েছে তার কাছে। বহু প্রজন্ম ধরে হারিদাশের মত কালিকাপুর গ্রামের অনেকেই সোলার ফুল তৈরি করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। নিরোধ গোলদার, জীবন গোলদার, কালিপদ শীল, অনন্ত গোলদার, গোবিন্দ গোলদার, তপন গোলদার, কৃষ্ণপদ গোলদারসহ ১০/১৫জন কারুশিল্পী রয়েছে কালিকাপুর গ্রামে। তারা পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন। সোলার ফুল তৈরি করে সিজনে তাদের মধ্যে অনেকেই লাখ টাকারও বেশি আয় করছেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন