বৃহস্পতিবার । ২রা অক্টোবর, ২০২৫ । ১৭ই আশ্বিন, ১৪৩২
গত ৪৮ ঘণ্টায় তিন মরদেহ উদ্ধার

হঠাৎ বাড়ছে লাশ, আতংকে মানুষ

জাহিদুল সাগর

সোমবার সন্ধ্যায় রূপসা সেতু বাইপাস সড়কের পাশ থেকে এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই রাতেই রূপসার একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অর্ধগলিত লাশ। আতংক না কাটতেই সকালে সংবাদ পাওয়া গেল রেলস্টেশনে আরেক লাশের। এর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি ও মারামারির খবর তো রয়েছে।

খুলনার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি কেমন-বুঝতে গত ৪৮ ঘণ্টায় সংগঠিত এসব ঘটনার দিকে চোখ রাখলেই অনুমান করা যায়। আতংকের বিষয় হচ্ছে, একটি ঘটনারও কারণ উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। জড়িত কেউ গ্রেপ্তারও হয়নি।

রেলস্টেশনে নিহত যুবকের নাম প্রিন্স, বাকি দু’জনেই পরিচয় পাওয়া যায়নি। তিনজনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

খুলনা রেলওয়ে পুলিশের ওসি ফেরদৌস আলম খান বলেন, সোমবার রাতে স্টেশনের প্লাটফর্মে এক যুবক মারা যান। মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে রেলওয়ে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত যুবকের নাম প্রিন্স। বয়স আনুমানিক ২৫ বছর। তিনি স্টেশন সংলগ্ন একটি হোটেলের কর্মচারী ছিলেন। তার শরীরে আঘাতের তেমন চিহ্ন নেই। মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।

রূপসা থানার ওসি মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় ৯৯৯ এর মাধ্যমে জাবুসা বিলে একটি মরদেহ ভাসছে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখান থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কিভাবে তিনি মারা গেছেন ও পরিচয় শনাক্তের জন্য পুলিশ কাজ করছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

লবণচরা থানার ওসি হাওলাদার সানওয়ার হুসাইন মাসুম বলেন, ‘থানা থেকে খানজাহান আলী সেতুর দিকে যাওয়ার পথে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের পাশে ওই বৃদ্ধ পড়েছিলেন। কোনো যানবাহন তাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। তার বয়স আনুমানিক ৮০ বছর।’

এদিকে ২৯ সেপ্টেম্বর ছিনতাইকারী মুন্না ওরফে কাটিং মুন্নাকে গুলি করে অপর ছিনতাইকারী চক্র। পরে তাকে একটি রিক্সায় তুলে দেয় ওই গ্রুপটি। রিক্সাটি তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে জেনারেল হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এ ঘটনার আগে ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে সোনাডাঙ্গা থানাধীন গাবতলা এলাকায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয় রিয়াজ নামে এক যুবক।

সম্প্রতি খুলনার নদ-নদীসহ বিভিন্ন স্থানে লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নগরবাসী।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, খুলনায় হঠাৎ অজ্ঞাত লাশের সংখ্যা বেড়েছে। নানা চেষ্টা করেও পুলিশ তাদের পরিচয় শনাক্ত ও অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না। বিষয়টি নিয়ে মানুষ আতংকে আছে।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, দিনদিন আতংকের নগরীতে পরিণত হচ্ছে খুলনা। একের পর এক লাশ উদ্ধার হলেও পুলিশ নির্বিকার। এভাবে একটা শহর চলতে পারে না। তিনি পুলিশের সব ইউনিটকে আরও শক্তিশালী করা এবং টহল কার্যক্রম জোরদার করার অনুরোধ জানান।

খুলনা মেট্রোপলিটন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রাশেদুল ইসলাম বলেন, দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া আইনশৃংখলা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। নগরীতে পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন