বৃহস্পতিবার । ২রা অক্টোবর, ২০২৫ । ১৭ই আশ্বিন, ১৪৩২
খুলনা গেজেটে সংবাদ প্রকাশের পর

ডুমুরিয়ায় ১২ মন্দির পেলো সরকারের অতিরিক্ত সহায়তা

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি

খুলনা গেজেটে সংবাদ প্রকাশের পর ডুমুরিয়া উপজেলায় শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্যাপন উপলক্ষ্যে পানিবন্দি ১১ মন্দিরসহ ১২ মন্দির পেলো সরকারের অতিরিক্ত সহায়তা। এসব মন্দিরের জন্য বাড়তি ৫০০ কেজি জিআর চাল বরাদ্দ হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আজ রবিবার এসব মন্দিরগুলোতে দেয়া হবে সরকারের এই মানবিক সহায়তা।

জানা যায়, আজ থেকে শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা। আগামী ২রা অক্টোবর শুভ বিজয়া দশমীবিহিত পূজা সমাপনান্তে বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার সমাপ্তি ঘটবে। এবার ১৪ ইউনিয়নে ২১৫টি পূজা ম-পে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুর্গাপূজা। এসব মন্দিরের জন্য ৫০০ কেজি করে জিআর চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। পানিবন্দির কারণে এবার রংপুর ও রঘুনাথপুর ইউনিয়নে ৪টি মন্দিরে পূজা হচ্ছে না। তবে পানির মধ্যে ৮টি মন্দিরে যথারীতি আয়োজন করেছে এ পূজার। পানিবন্দি ওই মন্দিরগুলোতে ডিঙি চড়ে পূজা দেখতে যাবেন ভক্তরা! ওই অঞ্চলের অধিকাংশ বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট দীর্ঘ আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে পানিবন্দি হয়ে আছে। এনিয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর দৈনিক খুলনা গেজেটে ‘ডুমুরিয়ায় পানিবন্দি ৪ মন্দিরে হচ্ছে না দুর্গাপূজা, ৮টিতে ভক্তরা যাবেন ডিঙি চড়ে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটিতে উপস্থাপিত মানবিক বিষয়টি নজরে আসে ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিনের। তাৎক্ষনিক তিনি পানিবন্দি মানুষের দুঃখের কথা চিন্তা করে মন্দিরগুলোতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে যাতে পূজা অর্চণা করতে পারে সে লক্ষ্যে খুলনা জেলা প্রশাসকের নিকট থেকে পানিবন্দি মন্দিরগুলোর জন্য অতিরিক্ত সহায়তার ব্যবস্থা করেন।

মন্দিরগুলো হলো, কৃষ্ণনগর উত্তরপাড়া বৈরাগীবাড়ি সার্বজনীন পূজা মন্দির, কৃষ্ণনগর পূর্বপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, কৃষ্ণনগর উত্তরপাড়া সরকার বাড়ি সার্বজনীন পূজা মন্দির, কৃষ্ণনগর উত্তরপাড়া মা করুণাময়ী সার্বজনীন মন্দির, কৃষ্ণনগর মধ্যপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির, মুজারঘুটা সার্বজনীন পূজা মন্দির, বারানসি সূর্য তরণ সংঘ সার্বজনীন পূজা মন্দির, বটভেড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির, মাধবকাটি পশ্চিমপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির, মির্জাপুর মধ্যপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির ও সিংগা সার্বজনীন পূজা মন্দিরসহ ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ কাপালিডাঙ্গা সার্বজনীন পূজা মন্দির। এসব মন্দিরের জন্য অতিরিক্ত আরো ৫০০ কেজি করে জিআর চাল বরাদ্দ হয়েছে।

এ বিষয়ে রঘুনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনোজিত কুমার বালা জানান, আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে রঘুনাথপুর ও রংপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট পানিবন্দি হয়ে আছে। প্রত্যেকটা মন্দির পানিবন্দি। পূজায় ভক্তদের অঞ্জলী দেয়ারও সুযোগ নেই। বাড়তি অনুদানের এই টাকা দিয়ে মন্দির চত্বরে বালি দিয়ে উঁচু করতে পারবে। তাহলে ভক্তবৃন্দের দাঁড়ানোর সুযোগ হবে এবং মানুষের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। মন্দিরে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়ায় জনপ্রতিনিধিসহ পানিবন্দি মানুষ অভিনন্দন জানিয়েছেন মানবিক ইউএনওকে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন জানান, আমি চেষ্টা করেছি পানিবন্দি মানুষের জন্য কিছু করার। তারা যে দীর্ঘদিন পানির মধ্যে দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন। যা খুবই বেদনাদায়ক। পানিবন্দি মন্দিরের জন্য জেলা প্রশাসক স্যারের নিকট থেকে বাড়তি বরাদ্দ আনতে পেরেছি। আশাকরি এবার সুন্দরভাবে পূজা অর্চনা করতে পারবে। তিনি বলেন, “শারদীয় দুর্গোৎসব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উদ্যাপনের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি পূজা ম-পে পুলিশের বিশেষ নজরদারি থাকবে এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও সক্রিয়ভাবে কাজ করবেন।” দর্শনার্থীরা যাতে নির্দ্বিধায় ও নির্বিঘ্নে প্রতিমা দর্শন করতে পারেন সে বিষয়ে কমিটির নেতৃবৃন্দকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। এ বছর দুর্গাপূজা অনেক আনন্দ ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হবে। এজন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন