জামায়াতে ইসলামীর জেনারেল সেক্রেটারি ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জামায়াতে ইসলাম ক্ষমতায় গেলে সরকারের কোন গাড়ি-বাড়িও ব্যবহার করবে না। সরকারি বরাদ্দের টাকা এমপি মন্ত্রীরা পেলে তা উন্নয়নের কাজ শেষে সঠিক হিসাব-নিকাশ দাখিল করবে। আমরা সেই বাংলাদেশ গড়তে চাই। নতুন বাংলাদেশ হবে পরিচ্ছন্ন ও দুর্নীতিমুক্ত একটি মানবিক বাংলাদেশ।শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে ছাত্র-যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে দাড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছিলেন। সেই ৫ বছরে ডুমুরিয়ায় জমে থাকা সন্ত্রাস মুক্ত করেছিলাম। সন্ধ্যার আগে মানুষ বাড়ি ফিরে যেতো। তখন ডুমুরিয়াকে মৃত্যুকূপ বলা হতো। নির্বাচনের আগে শপথ নিয়েছিলাম, বিজয়ী হলে সন্ত্রাসমুক্ত ডুমুরিয়া গড়বো। এমপি হওয়ার পর সেটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছিলাম। সেই সময় ৫ বছরে সাড়ে ৩’শ কোটি টাকার উন্নয়নের কাজ করেছিলাম। ব্রীজ-কালভার্ট, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ, মন্দির, মসজিদসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। কত টাকা কিসে খরচ হয়েছে তার প্রতিটা হিসাব বই ছেপে জনগণের কাছে বুঝে দিয়েছি। এরপর কত এমপি-মন্ত্রী হলো। তারা শুধু দেশের সম্পদ লুটে গেছেন। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্ত করতে গেলেও তাদেরকে টাকা দিতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উপকূল এলাকায় নদীগুলো সব সিলটেড হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে কয়েক বছর যাবত বৃষ্টি মৌসুমে বিলডাকাতিয়া, বিল বাদুড়িয়া, ঘোষড়া, মধুগ্রাম বিলসহ ডুমুরিয়ার অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ষাটের দশকে করা বেড়িবাঁধগুলো আর সংস্কার হয়নি। পানিসম্পদ উপদেষ্টা মহোদয় আমাকে কথা দিয়েছেন জলাবদ্ধতা নিরসনে স্বল্প মেয়াদি, মধ্য মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা চলছে। কয়েক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের মহাপরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের। কিছুদিন আগে ডিজি এসে শৈলমারী ইজ গেট পরিদর্শন করেছেন।
তিনি বলেছেন, অতিথি যারা ক্ষমতায় ছিলো তারা শুধু হিন্দু ধর্মাবম্বীদের ব্যবহার করেছেন। তাদের সকল অধিকার বঞ্চিত করে রেখেছেন। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও এদেশে সনাতনীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। জামায়াত ইসলাম ক্ষমতায় গেলে সম অধিকারে সকল ধর্মের মানুষ একসাথে মিলেমিশে বসবাস করবো এই নতুন বাংলাদেশে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে শিক্ষিত যুবকদের বেকারত্ব দুর করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বের হলেই চাকরি দেয়া হবে। যদি চাকরি দিতে নাও পারি তা হলে বেকারত্ব ভাতা দেয়া হবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যদেন জামায়াতে ইসলামীর এ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খাঁন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম সাদ্দাম। জামায়াতে ইসলামী ডুমুরিয়া উপজেলার আমীর মাওঃ মুখতার হুসাইনের সভাপতিত্বে বক্তব্যদেন, জেলা জামায়াতের আমীর মাওঃ এমরান হুসাইন, জেলা ছাত্রশিবির উত্তর শাখা সভাপতি আবু ইউসুফ ফকির, উপজেলা সনতনী শাখা সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী, জামায়াতের উপজেলা নায়েবে আমীর গাজী মো. সাইফুল্লাহ, উপজেলা সনাতনী শাখার সহসভাপতি ডাঃ হরিদাশ মন্ডল, নায়েবে আমীর মাওঃ হাবিবুর রহমান, সনাতনী শাখার সেক্রেটারী অধ্যক্ষ দেবপ্রসাদ মন্ডল, জামায়াত নেতা মাওঃ শফিকুল ইসলাম, হাফেজ রবিউল ইসলাম, মো. মাহামুদুল আলম, সরদার আবু তাহের, মো. মফিজুর রহমান, সামিদুল ইসলাম লিমন, খান আব্দুল গণি, শেখ মোসলেম উদ্দিন প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/এএজে