উপজেলার তেরখাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের চিত্রা নদীর ওপর নির্মিত একমাত্র কাঠের সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে চরমভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে শত শত মানুষ, বিশেষ করে স্কুল-শিক্ষার্থীরা, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর পাটাতনের অধিকাংশ কাঠের তক্তা পচে গিয়েছে কিংবা পড়ে গেছে। কোথাও কোথাও লোহার খুঁটিগুলোও নড়বড়ে রয়েছে। বর্ষাকালে কাঠ ভিজে গিয়ে আরও বেশি পিচ্ছিল হয়ে পড়ে, ফলে তখন চলাচল হয়ে ওঠে অত্যন্ত বিপজ্জনক।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পান্না সাহা ও লামিয়া খাতুন জানায়, “প্রতিদিন এই পুল পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। একটু অসাবধান হলেই পা পিছলে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। কিন্তু কোনো বিকল্প পথ নেই।” বিদ্যালয়টিতে প্রতিদিন প্রায় ৩শ’ থেকে ৪শ’ শিক্ষার্থী আসা-যাওয়া করে। শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, স্থানীয় বাসিন্দারাও উপজেলা পরিষদ, হাসপাতাল, বাজার এবং কৃষিপণ্যের পরিবহনের জন্য এই সেতুর ওপর নির্ভরশীল। ফলে সেতুটির দুরবস্থার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে পুরো এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা ইমন মোল্লা জানান, “কদিন আগে এক স্কুলছাত্র সেতু থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। অথচ এরপরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এলাকাবাসী বাধ্য হয়ে এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ব্যবহার করছে।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পূর্বে একাধিকবার সেতু সংস্কারের জন্য সরকারি বরাদ্দ এলেও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। শুধু মাত্র কিছু কাঠ পরিবর্তন করে দায়সারা সংস্কার করা হয়েছে। ফলে সেতুর স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী ভাস্কর মৃধা বলেন, “আমরা খুব শিগগিরই সরেজমিনে গিয়ে সেতুর অবস্থা পর্যালোচনা করব। এরপর প্রয়োজনীয় প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।”
এলাকাবাসী এবং অভিভাবকরা দাবি করেছেন, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিবেচনায় সেতুটির স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। তাদের প্রত্যাশা, সরকার দ্রুত একটি নতুন ও স্থায়ী সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
খুলনা গেজেট/এনএম