খুলনার পূর্ব রূপসা কৃষি ব্যাংক থেকে ১৬ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় ইউনুস শেখ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (১৭ আগস্ট) ভোর রাতে পূর্ব রূপসার বাগমারা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটক ব্যক্তি নিকলাপুর এলাকার বাসিন্দা এবং ইনসান শেখের ছেলে। পুলিশ তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
এর আগে অর্থ লুটের ঘটনায় পূর্ব রূপসা কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নিজে বাদী হয়ে অজ্ঞাতনাম পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন, যার নং ১৭।
মামলার এজাহারে যা বলা হয়েছে
কৃষি ব্যাংক শাখা ব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে রূপসা থানায় যে মামলাটি দায়ের করেছেন সেখানে বলা হয়েছে- রূপসা থানাধীন ৩ নং নৈহাটি ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামস্থ ঢাকা রোড সংলগ্ন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকটি অবস্থিত। মো: কামরুল ইসলাম ওই ব্যাংকের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন। ব্যাংকটি পরিচালনার জন্য তিনি, সেকেন্ড অফিসার এবং ক্যাশিয়ারসহ ৯ জন ব্যক্তি সেখানে কর্মরত রয়েছেন।
এছাড়া ব্যাংকের নিরাপত্তার স্বার্থে জেএসএস কোম্পানীর ৩ জন সিকিউরিটি গার্ড কর্মরত আছে। ব্যাংকটি প্রতি সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত লেনদেন চালু থাকে। সেই নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি ওই দিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত জনসাধারণের সেবায় চালু ছিল।
১৪ আগষ্ট বৃহস্পতিবার প্রতিদিনের ন্যায় ব্যাংকের লেনদেন শেষে ক্যাশিয়ার মো: মামুন ম্যানেজারকে জানান, ক্যাশে মোট ১৬ লাখ ১৬ হাজার ৪৯৬ টাকা আছে। যা কৃষি ব্যাংকের রূপসা শাখার ভল্টের মধ্যে রেখে প্রতিষ্ঠানটি তালাবদ্ধভাবে রেখে যে যার বাড়িতে চলে যান। এর আগে নিরাপত্তা প্রহরী আবুল কাশেমকে ব্যাংকের নিরাপত্তার জন্য সতর্ক করে ডিউটিতে রেখে চলে যাই।
১৫ আগস্ট রাত সোয়া ১০ টার দিকে সিকিউরিটি গার্ড আবুল কাশেম ম্যানেজারকে ফোনের মাধ্যমে জানায়, ব্যাংকের কলাপসিবল গেট এবং কাঠের দরজার তালা কাটা। পরে সে আরও জানায় ব্যাংকের ভেতরের ভল্টের তালা এবং দরজা এলোমেলো অবস্থায় রয়েছে। ভল্টের মধ্যে রেখে যাওয়া কোন টাকা সেখানে নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হলে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ব্যাংকের সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় ১৫ আগস্ট ভোর সোয়া ৬ টার দিকে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ব্যক্তি প্রবেশ পথের কলাপসিবল গেট এবং কাঠের দরজার তালা কেটে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাংকের ভেতরের ভল্ট কেটে উল্লেখিত পরিমান অর্থ লুট করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে পরে থানায় মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে ব্যাংকে এসে দেখেন মেইন গেটের তালা ভাঙ্গা দেখে নিরাপত্তা প্রহরী আবুল কশেম বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার পুলিশের উপস্থিতিতে লেজার ও ক্যাশ মিলিয়ে দেখেন ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা নেই। পরবর্তীতে আলোচনা সাপেক্ষে ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।
রূপসা থানার ডিউটি অফিসার এএসআই রুহুল আমিন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি লুটের ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে লুট হওয়া অর্থ এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধার কার্যক্রমে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।’
খুলনা গেজেট/এসএস