জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এর নোয়া চাচা খুলনা বিভাগীয় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন (৬২২) বাদামতলা শাখার কোষাধ্যক্ষ মিয়া আব্দুল ওদুদ (৫৫) ইন্তিকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সোমবার (১১ আগস্ট) রাত ৩ টার দিকে স্ট্রোক করলে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ পুত্র ২ কন্যা, আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে যান। সোমবার বাদ আছর শিরোমনি ইমামবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানাজায় ইমামতি করেন সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। জানাজা পূর্বে উপস্থিত মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যে তিনি বলেন, মানুষ মরণশীল। প্রতিটা মৃত্যু আমাদেরকে পরকালীন জীবন সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেয়। মৃত্যুর কথা স্মরণে থাকলে কোন মানুষ অন্যায় অত্যাচার অবিচার করতে পারে না, অন্যের উপর জুলুম করতে পারেনা, অন্যের জমি দখল করতে পারেনা। সব সময় পাপাচার থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে। ক্ষণস্থায়ী এই পার্থিব জীবনে একটু ভালো থাকার জন্য আমরা অনেক কষ্ট করি, অনেক ত্যাগ স্বীকার করি কিন্তু পরকালীন চিরস্থায়ী জীবনের ব্যাপারে আমরা উদাসীন। মৃত্যুর পর কবরের জীবন থেকেই আমাদের হিসাব শুরু হবে যদি সে হিসাব আমরা সঠিকভাবে দিতে না পারি তাহলে এখান থেকে আমাদের শাস্তি ভোগ করতে হবে। জাহান্নামের শাস্তি বড়ই ভয়ানক যা দুনিয়ার কোন শাস্তির সাথে তুলনা চলেনা। সুতরাং ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির জন্য আমাদের সর্বদা মৃত্যুর কথা স্মরণ করতে হবে।
মরহুম চাচার সাথে সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে সাবেক এমপি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, চাচা আমার এক বছরের ছোট। তার সঙ্গে বন্ধুর মতোই চলতাম। একসাথে খেলেছি একসাথে ঘুরে বেড়িয়েছি। তার সাথে আমার সম্পর্কটা অনেক গভীর ছিল। তিনি মূলত সাদাসিধে জীবন যাপন করতো। সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনে আমার ঢাকা থাকার সুবাদে তার সাথে দেখা কম হত। আমি বাড়িতে আসলে তিনি আমার কাছে আসতেন, ফোন করতেন, আমার খোঁজ খবর নিতেন। আপনারা সকলে আমার চাচার জন্য দোয়া করবেন মহান আল্লাহ যেন আমার চাচার ভুলত্রুটি ক্ষমা করে তাকে যেন জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করেন।
জানাযায়, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, নড়াইল জেলা আমীর আতাউর রহমান বাচ্চু, অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম, অধ্যাপক মুন্সী মইনুল ইসলাম ও মিয়া গোলাম কুদ্দুস, এডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা, হাফেজ আমিনুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, শেখ ইকবাল হোসেন, শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন, মাওলানা মোক্তার হোসেন, আমীর সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটো, আনিছুর রহমান, এম এ দাউদ, মো. ইউসুফ ফকির, কাজি সরোয়ার, শেখ আব্দুস সালাম, হাফেজ গোলাম মোস্তফা, বিল্লাল হোসেন, শেখ বদরউদ্দীন, শামসুল আলম খোকন, মাজহারুল ইসলাম, সাইফুল্লাহ তারেক, মোশাররফ হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন, জাহিদ হাসানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, যখন কোন মানুষের মৃত্যু হয়ে যায় তখন তার কাছ থেকে আমলগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন তিনটি আমল থাকে, একটি হলো সদকায়ে জারিয়া। উপকারি শিক্ষা এবং অপরটি নেক সন্তান-সন্ততি। জানাযা পূর্ব আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, নড়াইল জেলা আমীর আতাউর রহমান বাচ্চু, খুলনা জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা কবিরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মইনুল ইসলাম ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস।
এদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এর নোয়া চাচা খুলনা বিভাগীয় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন (৬২২) বাদামতলা শাখার কোষাধ্যক্ষ মিয়া আব্দুল ওদুদ এর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করে ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চল নেতৃবৃন্দ।
এক শোক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘মহান রাব্বুল আলামীন মরহুমের সব মানবিক ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করুন এবং তার গুনাহখাতাগুলোকে নেকিতে পরিবর্তন করে দিন। তার সব ভালো কাজগুলোকে কবুল করুন। মরহুমকে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতবাসী হিসেবে কবুল করুন।’
বিবৃতিদাতা হলেন-বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি খুলনা অব্জল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা মশিউর রহমান খান, মাস্টার শফিকুল ইসলাম ও মুহাদ্দিস হাফেজ রবিউল বাশার, অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান ও এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন ও মুন্সি মিজানুর রহমান, মো. আরাফাত হোসেন মিলন ও সেক্রেটারি রাকিব হাসান, আজিজুল ইসলাম ফারাজী ও ডা. সাঈফুজ্জামান।
খুলনা গেজেট/এসএস