খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ ০৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে বিকেলে ক্যাম্পাসের হাদী চত্বর থেকে শিক্ষার্থী-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ‘বিজয়যাত্রা’ বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাস থেকে জিরোপয়েন্ট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, দেশে যখন ফ্যাসিবাদী শক্তি একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছিল, তখনই তরুণরা এগিয়ে এসে প্রতিবাদের ধ্বনি তুলেছিল। কোটা সংস্কারের দাবিকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া আন্দোলন পরে পরিণত হয় গণআন্দোলনে। সেই আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতিতে আমরা একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ ফিরে পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে আমরা সকল শহিদদের স্মরণ ও আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করি। আজ আমরা যদি জুলাই শহিদ, আহত ও আন্দোলনকারীদের ভুলে যাই, তাহলে তা হবে দেশ ও জাতির জন্য বিশ্বাসঘাতকতা। পাশাপাশি আমরা জুলাই হত্যাযজ্ঞের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি দাবি জানাই।
উপাচার্য বলেন, আমাদের প্রত্যেককে জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৈষম্যহীন ও ন্যায্যতাভিত্তিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্রিয় থাকতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হারুনর রশীদ খান বলেন, জুলাই আন্দোলনের ফলে আমরা দেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার সুযোগ পেয়েছি। বিগত সময়ে জুলাই আন্দোলনের বিপক্ষে যারা ছিল, তাদের মুখোশ উন্মোচন ও ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এসেছে। এ ব্যাপারে সকল মহলকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ নূরুন্নবী। বক্তব্য রাখেন আইন স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর শেখ মাহমুদুল হাসান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ নাজমুস সাদাত, খান বাহাদুর আহছানউল্লা হলের প্রভোস্ট প্রফেসর শরিফ মোহাম্মদ খান। জুলাই আন্দোলনের সক্রিয় কর্মীদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন আয়মান আহাদ, ফাহাদ ইসলাম, খালিদ ও জুবায়ের।
পরে জুলাই শহিদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের আশু সুস্থতা এবং জুলাই যোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা গোলজার হোসাইন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ আশরাফুল আলম, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ নূর আলম, কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ শাহজাহান কবীর, চারুকলা স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শেখ সিরাজুল হাকিম, সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. সেলিনা আহমেদ, ফিশারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর মোঃ রেজাউল ইসলাম, গ্রন্থাগারিক (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোঃ গোলাম রাক্কিবু, খানজাহান আলী হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোঃ খসরুল আলম, আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রজমান, আইআইএসএসসিই’র পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ রায়হান আলী, কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ এনামুল কবীরসহ বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষকবৃন্দ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মোহাম্মদ আলীসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
পরে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ‘জুলাই হত্যাযজ্ঞের’ খুনিদের বিচারের দাবিতে চলমান গণস্বাক্ষর কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। সন্ধ্যায় একই স্থানে শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্ট সংগঠনসমূহের উদ্যোগে ‘সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ আয়োজন করা হয়।
খুলনা গেজেট/এসএস