খুলনায় বিষাক্ত মদপানে আরও দু’জনের মৃৃত্যু হয়েছে। জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার থুকড়া গ্রামে রবিউল গাজী (৩৫) ও রাসেল সরদার (৩০) নামে দুই যুবকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহত রবিউল গাজী (৩৫) থুকড়া গ্রামের বাসিন্দা রেজওয়ান গাজীর ছেলে এবং রাসেল সরদার (৩০) একই এলাকার জামির সরদারের ছেলে। তারা দু’জনই স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে।
এছাড়া এ ঘটনায় একই এলাকার আরও কয়েকজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে এনামুল সরদার, মুকুল বিশ্বাসসহ অনেকে তথ্য গোপন রেখে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে কোন এক সময় দলবেঁধে তারা থুকড়া বাজারে স্পিরিট জাতীয় এলকোহল সেবন করে। এতে একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েন সবাই। ওই রাতে রবিউল গাজীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থা গুরুতর হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিউল গাজীর মৃত্যু হয়।
তবে পরিবারের সদস্যরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে সেখান থেকে বাড়ি নিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে তার ময়নাতদন্ত ছাড়াই শনিবার সকালে লাশ দাফন করা হয়।
অপরদিকে অসুস্থ অবস্থায় শনিবার বিকেলে রাসেল সরদারকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে রাসেলের মৃত্যু হয়। সকালে তার মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়।
রাসেলের বাবা জামির সরদার বলেন, ‘ছেলেটা বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়ে তাই হসপিটালে এনে ভর্তি করি। কিছু খাইছে কিনা আমি জানি না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জনপ্রতিনিধি জানান, শুক্রবার রাতে কোন এক সময় থুকড়া বাজারে দলবেঁধে এরা এলকোহল সেবন করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে রবিউল ও শনিবার রাতে রাসেল মারা যান। বাকিরা নিজ বাড়িতে ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, এলাকাটিতে মাদকের ছয়লাব। বেশ কয়েকজন ডিলারের মাধ্যমে এলাকায় এ ধরনের মাদক সরবরাহ করা হয়। অল্প বয়সী যুবকেরা খুব সহজে হাতের নাগালেই পেয়ে যাচ্ছে এসব। আইনশৃঙ্খলার তেমন কোন তৎপরতা নেই। কেউ ধরা খেলেও নিমিষেই ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে ধ্বংসের মুখে পড়বে যুব সমাজ। আর এভাবে অকালে প্রাণ ঝরতে থাকবে।
এ ব্যাপারে ডুমুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুদ রানা বলেন, স্থানীয়ভাবে ঘটনাটি শুনেছি। তবে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে কিছু জানানো হয়নি বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান।
খুলনা গেজেট/সাগর/এনএম