শীতের আগমন শুরু হতে না হতেই বসুন্দিয়া এলাকায় খেজুরের রস আহরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। তারা বলছেন, ‘অগ্রহায়ণের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রস পাওয়া যাবে। বসুন্দিয়ায় ১ কোটি ৩০ লক্ষাধিক টাকার খেজুরের গুড় উৎপাদনের টার্গেট।
বসুন্দিয়া ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ৫৫৫০ খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ করা সম্ভব হবে, রস জ্বালিয়ে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার গুড় উৎপাদন সম্ভব।
খেজুরের রস আহরণের মধ্য দিয়েই গ্রামীণ জনপদে শুরু হয় শীতের আমেজ। বসুন্দিয়ার গ্রামে গ্রামে এখন খেজুর গাছ প্রস্তুতকরণের কাজ তৎপরভাবে চলছে। রাস্তার ধারে বা জমির আইলে থাকা খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করতে ভোরবেলা থেকেই ছুটছেন গাছিরা। ধারালো দা দিয়ে শৈল্পিক হাতে খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করছেন।
খেজুরের রস সংগ্রহের প্রস্তুতি সারতে সাগ্রহে তৎপর ও ব্যস্ততম সময় পার করছেন বসুন্দিয়া, জগন্নাথপুর, কেফায়েতনগর, সদুল্লাপুর, ঘুনি, পদ্মবিলা, গোপেরডাঙ্গা, জঙ্গলবাধাল, গাইদগাছি, জয়ন্তা ও বনগ্রামের গাছিরা ।
পদ্মবিলার খেজুর বাগানের গাজি আজিজুর রহমান বলছেন, গাছের মাথা পরিষ্কারের পর গাছগুলোকে দুই সপ্তাহের বিশ্রাম দেওয়া হচ্ছে। এরপর স্থাপন করা হবে বাঁশের নলী এবং তার পরই শুরু হবে মাটির ভাঁড়ে সুস্বাদু খেজুর রস আহরণের কাজ। তাদের আশা, আগামী ৪-৫ মাস খেজুরের রস ও গুড় বিক্রির অর্থেই চলবে সংসার।
আব্দুল লতিফ নামে অন্য এক গাছিও প্রায় ২০০ খেজুর গাছ প্রস্তুত করছেন। তিনি বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে খেজুরের রস ও গুড়ের দাম ভালো হওয়ায় আগামী চার মাস খেজুরের রস ও গুড় বিক্রি করে বাড়তি আয় হবে, যা সংসারের কাজে লগিয়েও সচ্ছলতা আসবে।”
বসুন্দিয়ার খাঁটি খেজুর গুড়ের দেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, “ভেজাল রোধে কৃষি বিভাগ বিভিন্ন সভা ও সেমিনারের মাধ্যমে কৃষকদের সচেতন করছে। এমনকি গুড়ে ভেজাল না দেওয়ার শপথও পাঠ করানো হয়েছে। আশা করা যায়, যশোরের উৎপাদিত খেজুর গুড় নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকবে না। গাছিদেরকে আরও দক্ষ ও উৎসাহী করতে সরকারিভাবে সভা-সেমিনার ও প্রযুক্তিনির্ভর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।”
খুলনা গেজেট/এনএম
