শুক্রবার । ৩রা অক্টোবর, ২০২৫ । ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩২

চিতলমারীতে গণমিলন ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

চিতলমারী প্রতিনিধি

বাগেরহাটের চিতলমারীতে এনজিও গণমিলন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে রোজিনা সিদ্দিক নামে এক বিধবা নারী প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর ওই পরিচালকের গলায় বীমার টাকা আটকে গেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গণমিলন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলে তদবীর চালাচ্ছেন।

রোজিনা সিদ্দিকের দায়ের করা অভিযোগ পত্রে জানা গেছে, গত ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর তার স্বামী সিদ্দিকুর রহমান সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান। এর ২ মাস আগে তিনি গণমিলন ফাউন্ডেশন চিতলমারী শাখা থেকে শতকরা ১৫% লাভে ৩ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এ সময় গনমিলন ফাউন্ডেশন বীমা বাবদ ৩ হাজার টাকা জমা নেয়। বীমা নেয়ার মানে হল কোন ঋণ গ্রহীতা মারা গেলে তার পরিবারের আর ওই লোনের টাকা পরিশোধ করা লাগে না। ঋণের দুই কিস্তি ৬০ হাজার টাকা দিয়ে তার স্বামী মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর গনমিলন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার বিশ্বাস প্রতারণার মাধ্যমে রোজিনা সিদ্দিকের কাছ থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও ওই টাকার সুদও বুঝে নেন। সে সময় তিনি বীমা সর্ম্পকে কিছুই জানতেন না।

বছর খানেক আগে তিনি ওই গনমিলন ফাউন্ডেশন থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। তখন রনজিৎ কুমার বিশ্বাস তার কাছ থেকে বীমা বাবদ ১০ হাজার টাকা জমা নেয়। সেই সময় তিনি স্বামীর বীমার বিষয়ে জানতে পারেন যে গণমিলন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা তার সাথে প্রতারণার মাধ্যমে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও ওই টাকার সুদও বুঝে নিয়েছে। সেই সাথে তার স্বামীর দেয়া একটি ব্লাংক চেক অদ্যবধি প্রতিষ্ঠানটি ফেরত দেয় নাই। বিষয়টি তাদের তিনি একাধিকবার বললেও তারা কর্ণপাত করেননি। এ বিষয়টি ওই ফাউন্ডেশনের পুরাতন কর্মীরা অবগত আছেন। প্রয়োজনে তারাও সত্য কথা বলবেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে রোজিনা সিদ্দিক স্থানীয় সাংবাদিকদের কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামী যখন মারা যান তখন আমার নাবালক দু’টি বাচ্চা। অনেক কষ্টে ধার দেনা করে গণমলিন ফাউন্ডেশনের টাকা পরিশোধ করেছি। ওই টাকা ছিল আমার কলিজা নিংড়ানো টাকা। আমি এর সুবিচার চাই। বর্তমানে তারা ইউএনও স্যারের কাছে দেওয়া অভিযোগপত্র তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্ন প্রভাবশালীদের দিয়ে হুমকি ও মামলা দিয়ে হয়রানির ভয় দেখাচ্ছে।

গণমিলন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, রোজিনা সিদ্দিকের সাথে এ বিষয় আমাদের সমঝোতার চেষ্টা চলছে। আমরা তার দাবীকৃত টাকা পরিশোধ করে দিব।

তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মারুফুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, গণমিলন ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে রোজিনা সিদ্দিক নামে এক মহিলার প্রতারণা ও চেক আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি নথিভূক্ত করা হয়েছে। দুই পক্ষকে নোর্টিশের মাধ্যমে ডেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন