বাগেরহাটে বিলুপ্ত ঘোষণার প্রস্তাব করা চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলায় সর্বাত্মক হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
কর্মসূচি শেষে সম্মিলিত সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘আজকের মতো আমরা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। আগামীকাল (সোমবার) নির্বাচন কমিশনে জেলায় চারটি আসন থাকার বিষয়ে শুনানি হবে। শুনানিতে নির্বাচন কমিশন যদি তিন আসনের প্রস্তাব থেকে সরে না আসে, তবে লাগাতার কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বলেন, “নির্বাচন কমিশন যদি বাগেরহাট-৪ আসন বহাল না রাখে তাহলে বাগেরহাট জেলায় কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে দেওয়া হবে না।”
অবরোধে অচল যোগাযোগ ব্যবস্থা
রোববার সকাল ৮টা থেকে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সড়কে গাছ ফেলে, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ও যানবাহন দাঁড় করিয়ে অবরোধ শুরু করে। খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা জজ কোর্টের সামনে, খুলনা-মাওয়া মহাসড়কের নওয়াপাড়া মোড়, খুলনা-মোংলা মহাসড়কের কাটাখালি জিরোপয়েন্ট, বাগেরহাট-মাওয়া মহাসড়কের মোল্লাহাট সেতু, বাগেরহাট-পিরোজপুর মহাসড়কের সাইনবোর্ড বাজার জিরোপয়েন্টসহ জেলার অন্তত অর্ধশতাধিক স্থানে সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।
ফলে বাগেরহাট জেলার উপর দিয়ে চলাচল করা পাঁচটি মহাসড়ক ও নয়টি উপজেলা সড়কসহ সব যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। জেলার ভেতরে ও বাইরে দূরপাল্লার বাসসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পিরোজপুর–বাগেরহাট-ঢাকা, বরিশাল-বাগেরহাট-খুলনা, বরিশাল-বাগেরহাট-বেলাপোল, খুলনা-বাগেরহাট-ঢাকা, সাতক্ষীরা, বরিশাল-বাগেরহাট-রংপুরসহ ১৬টি রুটে ৩৪ জেলার সাথে যাত্রীবাহী বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকে।
জনদুর্ভোগ চরমে
যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন কর্মজীবী মানুষ, শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রীরা। অনার্স পরীক্ষার্থী ও রোগীরা ভোগান্তির শিকার হন সবচেয়ে বেশি। চাকরিজীবীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষও বিপাকে পড়েন। এ সময় ফাঁকা সড়কে কিশোর ও যুবকদের ক্রিকেট খেলতেও দেখা যায়।
মোংলা বন্দরে প্রভাব
অবরোধের কারণে খুলনা-মোংলা মহাসড়ক ও নৌপথে সব ধরনের পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ইপিজেড, শিল্পকারখানা ও মোংলা বন্দর থেকে আমদানি-রপ্তানির মালামাল পরিবহন বন্ধ থাকে।
উল্লেখ্য, বাগেরহাটে আগে চারটি সংসদীয় আসন ছিল। গেল ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশনের বিশেষ কারিগরি কমিটি জেলায় একটি আসন কমিয়ে তিন আসনের প্রস্তাব দেয়। আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনা গেজেট/এসএস