জাতীয় স্টেডিয়ামে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ-নেপালের ফুটবল ম্যাচ। দুপুরের পরই এই স্টেডিয়াম ছাড়তে হবে আরচ্যারদের। যেখানে সর্বশেষ ইভেন্ট কম্পাউন্ড মিশ্র বিভাগের সেমিফাইনাল। সেই সেমিফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়াকে ১৫৮-১৫৩ পয়েন্টে হারিয়ে বাংলাদেশ ফাইনালে ওঠে। এশিয়ান আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপে অন্তত রৌপ্য পদক নিশ্চিত হওয়ায় উল্লাসে মাতে স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশ তৃতীয় বারের মতো এশিয়ান আরচ্যারির স্বাগতিক। আয়োজন ও ব্যবস্থাপনায় বেশ দক্ষতা দেখিয়েছে আরচ্যারি ফেডারেশন। গতকাল পর্যন্ত আট ইভেন্টের মধ্যে পদকের সম্ভাবনা রয়েছে শুধু কম্পাউন্ড নারী একক ইভেন্টে মনিরের। তার সেমিফাইনাল আগামীকাল। আজ (বুধবার) রিকার্ভ মিশ্র বিভাগে কোয়ার্টারে বিদায়ের পর কম্পাউন্ড মিশ্র বিভাগে সেমিফাইনালে উঠায় আশা খানিকটা জিইয়ে আছে। হিমু বাছাড় ও বন্যা আক্তার নিরাশ করেননি। শক্তিশালী কোরিয়ার বিপক্ষে ১৬০ স্কোরের মধ্যে ১৫৮ করেছেন তারা।
এশিয়ান আরচ্যারিতে অন্তত রৌপ্য নিশ্চিত করে বেশ খুশি হিমু বাছাড়, ‘এশিয়ান আরচ্যারিতে এটাই বাংলাদেশের প্রথম কম্পাউন্ড পদক। এর অংশ হতে পেরে অবশ্যই ভালো লাগছে।’ ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। তাদের হারিয়ে স্বর্ণপদকে চোখ হিমুর, ‘আমরা অবশ্যই এখন স্বর্ণের জন্য খেলব। কোরিয়াকে হারিয়েছি, ভারতকেও হারানো সম্ভব।’
নারী কম্পাউন্ড আরচ্যার বন্যা আক্তার অনেকদিন ধরেই খেলছেন। এশিয়ান পর্যায়ে একটি পদক পেয়ে তিনিও বেশ তৃপ্ত, ‘এর আগেও এশিয়ান আরচ্যারিতে আমি ও আশিক রেকর্ড স্কোর করেও পদক পাইনি। এবার ব্যক্তিগত ইভেন্টে যখন পারলাম না, তখন ফোকাস ছিলাম মিশ্র বিভাগ নিয়ে। আমি পার্টনারকে সহায়তা করেছি, সেও করেছে। আমরা নিজেদের সেরাটা দেওয়ায় ফাইনালে উঠতে পেরেছি।’
কোরিয়া বিশ্ব আরচ্যারির বড় পরাশক্তি। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ এবং অলিম্পিকেও পদক থাকে তাদের। সেই দেশের আরচ্যারকে হারানো নিয়ে ফরিদপুরের কন্যা বন্যা বলেন, ‘গত তিন বছর আমি কয়েকটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলেছি। এজন্য আমার টেম্পারমেন্ট অন্য আরচ্যারদের চেয়ে একটু বেশিই। কোরিয়ান আরচ্যারকে ভয় পাইনি, স্বাভাবিক খেলা খেলেই হারিয়েছি।’
বরাবরই রিকার্ভ আরচ্যাররা বাংলাদেশের আরচ্যারিতে আলোচনায় থাকেন। রোমান সানা, দিয়া সিদ্দিকী, আলিফ ও সাগরদের তুলনায় বন্যারা সুযোগ-সুবিধায় পিছিয়ে, তাই ফেডারেশনের কাছে বন্যা ও আশিকের দাবি, ‘আমরা আগেও বলেছি আমাদের বিদেশি কোচ দরকার। কম্পাউন্ড আগে অলিম্পিক ইভেন্ট ছিল না। সামনের অলিম্পিকে কম্পাউন্ড রয়েছে। আমাদের বিদেশি কোচ ও সুযোগ-সুবিধা দিলে আমরা আরও ভালো করতে পারব।’ শুধু বিদেশি কোচ নয়, অনেক সময় কম্পাউন্ড আরচ্যাররা সেভাবে দেশের বাইরে খেলার সুযোগও পান না। এ নিয়ে আক্ষেপ ঝরল তাদের কণ্ঠে, ‘অনেক টুর্নামেন্টে কম্পাউন্ড আরচ্যারদের পাঠানো হয় না, আবার পাঠালেও সংখ্যায় কম। অথচ আমাদের কম্পাউন্ডের ফলাফল কিন্তু খারাপ নয়।’
আরচ্যারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ। তিনি কম্পাউন্ড বিভাগেও গুরুত্ব দেওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করলেন, ‘২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে কম্পাউন্ড অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আমরা সেই লক্ষ্যে কম্পাউন্ডে আলাদা কোচ ও পরিকল্পনা করছি। এশিয়ান আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপের এই ফলাফল আমাদের আরও উৎসাহিত করছে।’
খুলনা গেজেট/এনএম

