আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া-সাকিব আল হাসানের ফেসবুক যুদ্ধ। যার শুরুটা রোববার রাতে সাকিবের একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান নাম্বার সেভেন্টি ফাইভ। এরপর দুজনের পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাসে উত্তপ্ত হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সেখানে সাকিবকে আক্রমণ করেন সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, সাদিক কায়েমের মত জুলাই বিপ্লবের অগ্রসেনানীরা।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাকিবকে ইঙ্গিত দিয়ে আবারও নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। যেখানে তার সাথে সাকিবের রাজনীতিতে জড়ানো নিয়ে কথোপকথনের অংশ তুলে ধরেন। শুধু ভালো ক্রিকেটার বলেই খুনিদের এনডোর্স করা ছাড়াও শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি, মানি লন্ডারিং, ফাইনানশিয়াল ফ্রড করা কাউকে পুনর্বাসনের সুযোগ নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি।
দুজনের ফেসবুক যুদ্ধ নিয়ে গণমাধ্যমকে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আসিফ মাহমুদ। তার মতে, সাকিব এখনও আওয়ামী লীগকে ধারন করে বলেই ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তাই তিনি যেন আর কখনও বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দিতে না পারে, সেজন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দেশনা দেয়ার কথাও নিশ্চিত করেছেন তিনি।
মুঠোফোনে গণমাধ্যমকে আসিফ মাহমুদ বলেন, যতবার তিনি দেশে আসার জন্য চেয়েছেন, খেলার জন্য চেয়েছেন, বলেছেন ”আমাকে জোর করে নমিনেশন দেয়া হয়েছে। আমি রাজনীতির সাথে জড়িত না। আমি শুধু এমপি ইলেকশনটা করেছি এলাকার মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছি। কিন্তু আসল সত্যটা তো হচ্ছে, তিনি আসলে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ট ভাবে জড়িত, যার প্রমাণ আমরা পেলাম।
এদিকে জুলাই আন্দোলনের পর পরিবার নিয়ে দেশের বাইরে থাকা সাকিবের সাথেও যোগাযোগ করা হয়। শেখ হাসিনাকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোর বিষয়ে তিনি বলেন, মতপ্রকাশের অধিকার সবার আছে বলে মনে করেন তিনি। একটা রাজনৈতিক দলের অংশ হিসেবে এমন স্ট্যাটাস ভুলও মনে করেন না জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
গণমাধ্যমকে মুঠোফোনে সাকিব বলেন, সে (শেখ হাসিনা) তো সবসময় সিরিয়াসলি খেলা ফলো করেছে, খেলা দেখসে তাই না। খেলার সাথে যুক্ত ছিল এবং ওতপ্রোতভাবেই যুক্ত ছিল। তো সেখান থেকেই একটা সম্পর্ক হইসে। সেটা রাজনীতির আগে থেকে। সেই জায়গা থেকে আমি একজনকে উইশ করতেই পারি। তাছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্য, কাউকে কোনো ইঙ্গিত, এমন কোনো কিছুই না।
এদিকে ভার্চুয়াল যুদ্ধের মাঝেই দু;সংবাদ শুনতে হয়েছে সাকিবকে। অর্থ পাচারসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে বড় ধাক্কাটা আসতে যাচ্ছে ক্রিকেট বোর্ড থেকে। ক্রীড়া উপদেষ্টা নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রণালয় থেকে বিসিবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে, সাকিব যেন আর কখনও লাল-সবুজ জার্সি গায়ে দিতে না পারে।
এ প্রসঙ্গে আসিফ মাহমুদ বলেন, তাকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেয়া যাবে না। বাংলাদেশের জার্সির পরিচয় বহন করতে দেয়া, এটা আমার পক্ষে কোনোভাবেই সুযোগ করে দেয়া সম্ভব না। ইতোপূর্বে এটা আমি বিসিবিকে না বললেও এখন আমার বোর্ডের প্রতি স্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে, সাকিব আল হাসান আর কখনও বাংলাদেশ টিমে খেলতে পারবেন না।
খুলনা গেজেট/এএজে