সিপিএল

শেষ বলের নাটকীয় জয়ে প্লে-অফে সাকিবের দল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

জয়ের জন্য শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ২ রান, স্ট্রাইকে ছিলেন নতুন ব্যাটার শামার স্প্রিঙ্গার। আগের বলেই রান আউট হয়ে ফিরেছেন অধিনায়ক ইমাদ ওয়াসিম। এমন চাপের মুহূর্তে ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ জেতালেন স্প্রিঙ্গার—শেরফেইন রাদারফোর্ডের শর্ট বলকে ওয়াইড মিড উইকেট দিয়ে তুলে নিয়ে সহজেই নেন দুই রান, নিশ্চিত করেন রোমাঞ্চকর এক জয়।

ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) বারবাডোজ রয়্যালসকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডা ফ্যালকনস। ৯ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে তাদের প্লে-অফের টিকিট।

বাংলাদেশি সমর্থকদের কাছে দলটি পরিচিত ‘সাকিব আল হাসানের দল’ হিসেবে। তবে সাবেক দলের বিপক্ষে এই জয়ে বল ও ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি ৩৮ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। ৩ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন সাকিব, ব্যাট হাতে করেন ১২ বলে ১৫ রান।

বারবাডোজ রয়্যালস প্রথমে ব্যাটিং করে ২০ ওভারে তোলে ১৮৭ রান। উদ্বোধনী জুটিতেই আসে ৯১ রান। তবে সেই জুটিতে মূল ভূমিকা রাখেন ব্র্যান্ডন কিং। ৬৫ বলে ৭টি ছক্কায় ৯৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। কুইন্টন ডি কক করেন ২৮ বলে ২৭। শেষদিকে রাদারফোর্ড ১৭ বলে করেন ২৯, আর ক্রিস গ্রিনের ব্যাট থেকে আসে ৬ বলে ১৬ রান।

সাকিব বল হাতে আসেন নবম ওভারে। তার প্রথম ওভারে দুটি বাউন্ডারি সহ আসে ১২ রান। দ্বিতীয় ওভারে দেন ৬ রান। তৃতীয় ওভারে কিং মারেন একটি ছক্কা ও দুটি চার—এরপর বোলিং থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় সাকিবকে।

রান তাড়ায় অ্যান্টিগার শুরুটা ছিল দ্রুত। আমির জাঙ্গু ১৪ বলে করেন ২৩ রান, তবে রানআউটে কাটা পড়েন। এরপর উইকেটে আসা ব্যাটাররা ছোট ছোট অবদান রাখলেও কেউই ইনিংস লম্বা করতে পারেননি।

সাকিব নামেন পাঁচ নম্বরে। অফস্পিনার গ্রিনকে মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা মারেন, পরের ওভারে আসে একটি বাউন্ডারি। তবে মিডিয়াম পেসার ইথান বশের শর্ট বল পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন তিনি।

ম্যাচে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন আন্দ্রিয়েস হাউস, যিনি শেষ ওভারের আগপর্যন্ত দলকে লড়াইয়ে রাখেন। শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১২ রানের, হাতে থাকে মাত্র এক উইকেট।

বারবাডোজ অধিনায়ক পাওয়েল এক প্রান্তে দুই অভিজ্ঞ স্পিনার ওয়ারিক্যান ও গ্রিন থাকা সত্ত্বেও বোলিং দেন অনিয়মিত পেসার রাদারফোর্ডকে। ওভারের শুরু হয় দুটি টানা ওয়াইড দিয়ে। এরপর ইমাদ ওয়াসিম নেন দুই রান, পরে আরও একটি ওয়াইড দেন রাদারফোর্ড।

মাত্র এক বৈধ বলেই ৫ রান উঠে যায়। এরপর তিন বলে আসে আরও ৪ রান। পঞ্চম বলে দ্বিতীয় রানের চেষ্টায় রান আউট হন ইমাদ (১১ বলে ১৭)। শেষ বলে স্ট্রাইক পান স্প্রিঙ্গার—দুটি রান নিয়ে ম্যাচ শেষ করেন কোনো বাউন্ডারি ছাড়াই।

এই হারে সিপিএলের এবারের আসরে বারবাডোজ রয়্যালসের জয়ের খাতা এখনও খোলেনি—ছয় ম্যাচে শূন্য জয়। এই ম্যাচেই তারা হাতছাড়া করেছে ৭টি ক্যাচ, যার মধ্যে ৪টি ছিল ক্রিস গ্রিনের, আর ড্যানিয়েল স্যামস মিস করেছেন দুটি।

প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন পাকিস্তানি পেসার সালমান ইরশাদ। ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে শেষ ওভারে অসাধারণ বোলিং করেছেন তিনি—শেষ দুই ওভারে দেন কেবল ৮ রান।

প্রাথমিক পর্বে অ্যান্টিগা ও বারবুডার আর একটি মাত্র ম্যাচ বাকি। তারা মাঠে নামবে গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে—বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায়।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন