Edit Content
খুলনা, বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার । ৭ই আগস্ট, ২০২৫ । ২৩শে শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

ভবিষ্যতের বাহন, অতীতের ছায়া: কাওয়াসাকির ‘কোরলিও’

গেজেট ডেস্ক

ওসাকার এক উষ্ণ বিকেলে, যেন কোনো ভিডিও গেম বা কল্পকাহিনির জগত থেকে উঠে এসেছে — বিশাল এক ধাতব নেকড়ের মতো রোবট দাঁড়িয়ে আছে মঞ্চের মাঝখানে। তার চারটি পা মৃদু কাঁপছে উত্তেজনায়, যেন সে নিজেই অপেক্ষা করছে দৌড়ে ছুটে চলার।

এটাই কোরলিও — কাওয়াসাকি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজের তৈরি একটি হাইড্রোজেনচালিত চারপেয়ে রোবট, যেটি মানুষের চড়ার জন্য তৈরি। ২০২৫ সালের ওসাকা-কানসাই এক্সপোর প্রাক-দর্শনে প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে উন্মোচিত হয় এই ব্যতিক্রমী বাহনটি।

প্রযুক্তির ছোঁয়ায় প্রাণের ছায়া
সাধারণ কোনো প্রোটোটাইপ নয়, কোরলিও যেন ভবিষ্যতের পরিবহনব্যবস্থার এক জীবন্ত ইঙ্গিত। কাওয়াসাকি বিশ্বাস করে, আগামী পঁচিশ বছরের মধ্যে এমন বাহনগুলো আমাদের দৈনন্দিন যাত্রার অংশ হয়ে উঠবে।

কোরলিওর ডিজাইন যেন একসাথে আধুনিক প্রযুক্তি আর আদিম প্রাণের সৌন্দর্যকে একসুতোয় গেঁথে এনেছে। দেখতে যেমন রূপকথার চরিত্রের মতো, চলাফেরাতেও তেমনি বুনো হরিণ বা চিতাবাঘের মতো স্বাচ্ছন্দ্য ও গ্রেস।

চালাতে কোনো স্টিয়ারিং বা প্যাডেলের দরকার হয় না। ব্যবহারকারীর শরীরের নড়াচড়া, ভারসাম্যের সূক্ষ্ম পরিবর্তন দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করা যায় কোরলিওকে। সঙ্গে থাকে একটি হেডস-আপ ডিসপ্লে, যা দেখায় হাইড্রোজেন স্তর, গতি, ও ভারসাম্যের নির্দেশনা।

প্রযুক্তির পেছনে পরিচ্ছন্ন শক্তি
কোরলিও চালিত হয় একটি হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল ও ১৫০ সিসির ইঞ্জিনের সমন্বয়ে—যার মাধ্যমে কাওয়াসাকি পরিবেশবান্ধব, স্বল্প-দূষণ যন্ত্র তৈরির প্রতিশ্রুতি রাখছে। এর আগে প্রতিষ্ঠানটি Ninja H2 HySE মোটরবাইক উন্মোচন করেছিল, সেটিও হাইড্রোজেনচালিত ছিল।

কিন্তু কোরলিও সেই প্রচেষ্টাকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে—এখানে রয়েছে রোবোটিক্স, সবুজ জ্বালানি, আর প্রাণীর মতো সরল ও মানবিক নকশার এক অসাধারণ সমন্বয়।

কল্পনার রূপ থেকে বাস্তবে
ভিডিও গেমপ্রেমীরা সহজেই কোরলিওর নকশায় খুঁজে পাবেন Horizon Zero Dawn–এর প্রভাব। সেই গেমের রোবটিক প্রাণীদের মতোই কোরলিও যেন কল্পনার ছায়া মেখে এসেছে বাস্তব দুনিয়ায়।

প্রযুক্তিগত বিস্তারিত এখনো গোপন থাকলেও, একে শুধু ‘রোবট বাহন’ বলে ছোট করা যাবে না। কাওয়াসাকি চাচ্ছে পরিবহনকে শুধু গতির প্রশ্ন নয়, বরং একধরনের আবেগ, অভিজ্ঞতা ও সৌন্দর্যের অংশ বানাতে।

শেষ কথা
কোরলিও হয়তো এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে, কিন্তু এটি আমাদের নিয়ে যায় এমন এক ভবিষ্যতের কল্পনায়—যেখানে যন্ত্র কেবল বাহন নয়, সঙ্গীও। যেখানে চলার মানে শুধু গন্তব্যে পৌঁছানো নয়, বরং একসাথে চলার অভিজ্ঞতা উপভোগ করা।

কাওয়াসাকির এই ধাতব নেকড়েটি হয়তো একদিন আমাদের প্রাত্যহিক সঙ্গী হয়ে উঠবে—ঘোড়ার মতো বিশ্বস্ত, আর প্রযুক্তির মতো নিখুঁত।

সূত্রঃ দি বিজনেস ষ্টার্ন্ডাড, অনুবাদে এসএস

খুলনা গেজেট/এসএস




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন