মুজদালিফায় বিশ্রামরত লাখো হাজি

গেজেট ডেস্ক

সূর্য ডোবার পর মাগরিব না পড়েই মুজদালিফার পথে রওনা হন হাজিরা। সেখানে গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ একসাথে আদায় করেন তারা। এরপর সেখানেই রাত যাপন করছেন।

মুজদালিফা সৌদি আরবের মক্কা নগরীর কাছের একটি সমতল এলাকা। মিনা ও আরাফাতের পথে মিনার দক্ষিণ-পূর্বে এর অবস্থান।

মুজদালিফায় অবস্থান কেন করতে হয়?

পবিত্র হজ আদায়ে ৯ জিলহজ রাত ও ১০ জিলহজ সুবহে সাদিকের পর থেকে সূর্য অস্ত যাওয়ার আগ পর্যন্ত মুজদালিফায় অবস্থান করা ওয়াজিব। মুজদালিফায় অবস্থান প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন,

فَاِذَاۤ اَفَضۡتُمۡ مِّنۡ عَرَفٰتٍ فَاذۡکُرُوا اللّٰهَ عِنۡدَ الۡمَشۡعَرِ الۡحَرَامِ ۪ وَ اذۡکُرُوۡهُ کَمَا هَدٰىکُمۡ ۚ وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مِّنۡ قَبۡلِهٖ لَمِنَ الضَّآلِّیۡنَ ‘যখন তোমরা আরাফাহ থেকে প্রত্যাবর্তন করো তখন আল্লাহকে স্মরণ করো (মাশয়ারুল হারামে) মুজদালিফায়। স্মরণ করো যেভাবে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, তোমরা তো এর আগে পথভ্রষ্ট ছিলে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৯৮)

আরাফাতের ময়দান ছেড়ে প্রায় ছয় কিলোমিটার অতিক্রম করার পর মুজদালিফা। তারপর ওয়াদিয়ে মুহাসসারের পরে মিনা। ওয়াদিয়ে মুহাসসার (হস্তিবাহিনীর ধ্বংসের স্থান) ছাড়া পুরো মুজদালিফা এলাকায় অবস্থান করা যায়।

মুজদালিফায় অবস্থানের ফজিলত

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুজদালিফায় অবস্থানের ফজিলত সম্পর্কে বলেন, ‘মহান আল্লাহ এই দিনে তোমাদের ওপর অনুকম্পা করেছেন, অতঃপর তিনি গুনাহ্গারদেরকে সৎকাজকারীদের কাছে সোপর্দ করেছেন। আর সৎকাজকারীরা যা চেয়েছে তা তিনি দিয়েছেন।’ (ইবনু মাজাহ ৩০২৩)

মুজদালিফায় অবস্থানের দুটি ওয়াজিব:

এক. ১০ জিলহজ সুবহে সাদিক থেকে সূর্য উদয়ের পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো মুহূর্তে অবস্থান করা ওয়াজিব। কেউ যদি সূর্য উদয়ের পরে অথবা সুবহে সাদিকের আগে অবস্থান করেন তবে তার অবস্থান শুদ্ধ হবে না।

দুই. মুজদালিফায় মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে আদায় করা ওয়াজিব। ইহরামে থাকা ও আরাফাতে অবস্থান করার শর্তে।

মুজদালিফার অবস্থানে সুন্নত সময়

এক. সুবহে সাদিক থেকে উত্তমরূপে ফরসা হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ সূর্য উদিত হওয়ার আগে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা যায়। এই পর্যন্ত মুজদালিফায় অবস্থান করা।

দুই. মুজদালিফায় মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে জামাতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা।

মুজদালিফার বিবিধ মাসয়ালা

এক. মুজদালিফায় মাগরিব ও এশার নামাজের জন্য এক আজান এক ইকামত যথেষ্ট।

দুই. কিন্তু আরাফাতে প্রত্যেক নামাজের জন্য ইকামত জরুরি; কেননা আরাফাতে দ্বিতীয় নামাজ হচ্ছে আসরের নামাজ যা জোহরের ওয়াক্তে আগে পড়তে হচ্ছে। তাই সবার অবগতির জন্য দ্বিতীয় ইকামত দিতে হয়। কিন্তু মুজদালিফার দ্বিতীয় নামাজ হলো এশার, যা ওয়াক্তমতোই পড়া হচ্ছে, তাই নতুন ঘোষণার প্রয়োজন নেই।

তিন. সময় সংকীর্ণ হওয়ার কারণে যদি মুজদালিফায় পৌঁছানোর আগে সুবহে সাদিক হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয় তাহলে উভয় নামাজ পথিমধ্যে আদায় করে নেবেন। তা না হলে কাজা হয়ে যাবে।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন