শনিবার । ১৫ই নভেম্বর, ২০২৫ । ৩০শে কার্তিক, ১৪৩২

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরে থানায় বিস্ফোরণে নিহত ৯, আহত ২৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতের কাশ্মীরের শ্রীনগরের নওগাম থানায় জব্দ করা বিস্ফোরক পরীক্ষা করতে গিয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৯ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২৯ জন। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাতের এ ঘটনায় নিহতদের অধিকাংশই পুলিশ সদস্য ও ফরেনসিক দলের সদস্য। শ্রীনগর প্রশাসনের দুজন কর্মকর্তাও প্রাণ হারান।

সম্প্রতি ভারতের হরিয়ানার ফারিদাবাদ থেকে আনা বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক নওগাম থানায় মজুত রাখা হয়েছিল। সেগুলো পরীক্ষা ও নড়াচড়া করার সময়ই বিস্ফোরণ ঘটে। আহতদের ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৯২ বেস হাসপাতালে এবং শের-ই-কাশ্মির ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা পৌঁছেছেন এবং পুরো এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে।

নওগাম থানা সম্প্রতি জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের পোস্টার ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা তদন্ত করে একটি বড় জঙ্গি চক্র উন্মোচন করেছিল। এসব পোস্টারে নিরাপত্তা বাহিনী ও কাশ্মীরের ‘বহিরাগতদের’ ওপর বড় হামলার হুমকি দেওয়া হয়।

তদন্তে দেখা যায়, অত্যন্ত শিক্ষিত ও পেশাজীবী কয়েকজন ব্যক্তি এ নেটওয়ার্কে যুক্ত ছিলেন। এ সূত্র ধরে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার এবং বেশ কয়েকজন ‘সন্ত্রাসী ডাক্তার’কে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত অক্টোবর মাসে গ্রেপ্তার হওয়া আদিল আহমেদ রাথরকে সিসিটিভি ফুটেজে এসব পোস্টার লাগাতে দেখা যায়। তিনি আনন্তনাগের সরকারি মেডিকেল কলেজে চাকরি করতেন, পরে চলে যান উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরে। গ্রেপ্তারের পর তার লকার থেকে একটি অ্যাসল্ট রাইফেলও উদ্ধার হয়।

তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় উঠে আসে আরেক চিকিৎসকের নাম—মুজাম্মিল শাকিল। তিনি হরিয়ানার ফারিদাবাদের আল-ফালাহ মেডিকেল কলেজে কর্মরত ছিলেন। শাকিলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি বাসায় যৌথ অভিযানে জম্মু-কাশ্মীর ও হরিয়ানা পুলিশ প্রায় ৩ হাজার কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার করে। শাকিলের গ্রেপ্তারের পর আরও তথ্য মেলে এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক চিকিৎসক শাহীন সাঈদকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

তার কয়েক ঘণ্টা পরই দিল্লির লালকেল্লা এলাকার এক ব্যস্ত সড়কে সিগন্যালে থেমে থাকা একটি গাড়িতে বিস্ফোরণে ১৩ জন নিহত ও ২০ জনের বেশি আহত হন। ধ্বংস হয় কয়েকটি গাড়িও।

পরের দিন তদন্তে উঠে আসে আরেক চিকিৎসকের নাম—উমর নবি। শীর্ষ সূত্রগুলো জানায়, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত হুন্ডাই আই-২০ গাড়িটি তিনিই চালাচ্ছিলেন। জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) জানায়, বোমা তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক উদ্ধার হওয়ায় সন্দেহভাজনরা আতঙ্কে পড়ে যান এবং আত্মগোপনে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

তদন্তকারীরা মনে করছেন, সন্দেহভাজনরা তড়িঘড়ি করে আইইডি প্রস্তুত করায় সেটি সঠিকভাবে সক্রিয় করা হয়নি। আতঙ্কে তারা বিস্ফোরক যথাযথভাবে সেট করতে পারেননি, ফলে পরিকল্পনা অনুযায়ী বড় ধরনের ক্ষতি করতে ব্যর্থ হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন