‘ইসরাইলী বর্বরতা এমন প্রান্তিকতায় পৌঁছেছে যে, গাজায় ত্রাণবাহী জাহাজ আটক ও মানবাধিকারকর্মীদের গ্রেপ্তার করতে দ্বিধা করেনি।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘মুসলমানরা শহীদ হতে জানে কিন্তু পরাজয় বরণ করতে জানে না। তাই শাহাদাতের সিঁড়ি বেয়ে এবং শহীদদের রক্ত-পিচ্ছিল পথ ধরেই স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র বিশ্ব মানচিত্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।’
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বাদ জুমা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ যৌথ আয়োজিত গাজায় ত্রাণবাহী জাহাজ ফ্লোটিলায় আক্রমণ, হামলা ও বিশ্বের মানবাধিকার কর্মীদের আটকের প্রতিবাদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের আয়োজিত বিক্ষোভ-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দীনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ও বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা আব্দুল হালিম। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মাদ মাহফুজুর রহমান ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক এবং ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি কামাল হোসাইন প্রমুখ।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘ইসরাইলী দখলদার বাহিনী গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিনে নির্মম ও নিষ্ঠুর গণহত্যা চালাচ্ছে। তাদের এ নিধনযজ্ঞের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ সহ গাজার সাধারণ ও নিরস্ত্র শান্তিপ্রিয় মানুষ। এ নির্মমতার প্রতিবাদের মুসলিম উম্মাহসহ পুরো বিশ্ব ফুঁসে উঠেছে। ইসরাইলী বর্বরতা এমন প্রান্তিকতায় পৌঁছেছে যে, গাজায় ত্রাণবাহী জাহাজ আটক ও মানবাধিকারকর্মীদের গ্রেফতার করতে দ্বিধা করেনি। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও জায়নবাদীদের নির্মম নিধনযজ্ঞ ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হয়নি। কিন্তু ইতিহাস স্বাক্ষী জুলুম-নির্যাতন, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও নির্মমতা চালিয়ে মুসলমানদের কখনো উৎখাত করা যায়নি; আর কখনো যাবেও না।’
তিনি গাজাসহ ফিলিস্তিনি জায়নবাদী নির্মমতা বন্ধে জাতিসঙ্ঘ, মুসলিম বিশ্বসহ বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, ‘অন্যথায় ইসরাইলি হায়েনারা মানবসভ্যতার জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেবে।’
তিনি বলেন, ‘মূলত দখলদাররা গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিনে মুসলমানদের রক্ত নিয়ে হোলিখেলায় মেতে উঠেছে। প্রতিনিয়তই মজলুম মুসলমানদের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে গাজার রাজপথ। দখলদারদের নির্মমতার প্রতিবাদে বিশ্ববাসী সোচ্চার হলেও বিশ্ব মোড়ল অস্ত্রসহ নানাবিধ সহায়তা প্রদান করে গাজাকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জায়নবাদী নেতা নেতানিয়াহু একজন চিহ্নিত ও স্বীকৃত যুদ্ধাপরাধী এবং বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি ও বিপজ্জনক ব্যক্তি। তাই তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিচার করতে হবে।’
অবিলম্বে গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ করতে ওআইসিসহ মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা আব্দুল হামিম বলেন, ‘ইসরাইলী দখলদার বাহিনী পুরো গাজা নগরীকে ধ্বংসস্তুপ ও মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। শুধু ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৭০ হাজারেরও বেশি গাজাবাসীকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। সেখানে খাদ্য, পাণীয়সহ মানবিক সরবরাহে মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। কিন্তু বর্বর ইসরাইলীরা ত্রাণবাহী জাহাজ আটক এবং প্রায় ৫০০ মানবাধিকার কর্মীকে আটক করে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে।’
তিনি অবিলম্বে বর্বরতা ও নির্মমতা বন্ধ করতে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যথায় গাজা অভিমুখে লংমার্চ করা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘ফিলিস্তিন ও গাজাবাসীকে রক্ষার জন্য শান্তিপূর্ণ কোনো পথ খোলা নেই বরং ঐক্যবদ্ধ জিহাদই এর প্রকৃত সমাধান। কারণ, তারা গাজায় মানবিক সাহায্য প্রদান করতেও বাধা দিচ্ছে। ইসলাইলি বর্বরতায় পুরো গাজা নগরী এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। তাই মজলুম গাজাবাসীসহ অধিকারবঞ্চিত ফিলিস্তিনীদের রক্ষায় মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ জোট গঠন করে জিহাদের মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে।’
তিনি গাজাবাসীদের রক্ষায় সকলকে জিহাদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
খুলনা গেজেট/এনএম
								
    
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
