কলকাতার ব্যস্ততম এলাকা শিয়ালদায় ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। অভিযোগ উঠেছে, ‘বাংলাদেশি’ এবং ‘রোহিঙ্গা’ বলে অভিযুক্ত করে কয়েকজন বাংলাভাষী মুসলিম ছাত্রকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে। শহরের ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল হোস্টেলে থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন বহু সংখ্যালঘু ছাত্র। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই হোস্টেলের কয়েকজন ছাত্র শিয়ালদার কাছে একটি দোকানে মোবাইলের কভার কিনতে গেলে ঘটনাটি ঘটে।
এফআইআর অনুযায়ী, বাংলায় কথা বলায় হিন্দিভাষী ব্যবসায়ীসহ কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি তাদের ওপর চড়াও হয়। শুরু হয় বচসা, পরে তা রূপ নেয় হামলায়। ছাত্রদের অভিযোগ, রড, হকি স্টিক দিয়ে পেটানো হয় এবং ছুরি দিয়ে কোপানোর চেষ্টা করা হয়। দোকানের মালিকসহ অন্তত ১০-১২ জন এই হামলায় জড়িত ছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
আহত ছাত্রদের দাবি, হামলার পর তারা হোস্টেলে ফোন করে বন্ধুদের ডেকে আনেন। কিন্তু বন্ধুরাও পৌঁছে একইভাবে হামলার শিকার হন। পরে তাদের হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসকদের মতে, সবার শরীরে আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট এবং মেডিক্যাল সার্টিফিকেটও দেয়া হয়েছে।
রাতেই মুচিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে দুজনকে আটক করে পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এফআইআর-এ অভিযুক্তদের ‘অবাঙালি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, আটক ব্যক্তিরা সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে বলছিলেন-‘এরা বাংলাদেশি, রোহিঙ্গা। এদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে হবে।
এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেছে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিকেলে হোস্টেল সুপার এবং আহত ছাত্রদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তারা।
এদিকে ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে শহরজুড়ে। বৃহস্পতিবার বিকেলে মধ্য কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেয়া হয়েছে। আয়োজক কৌশিক মাইতি বলেন, এতদিন শুনেছি ভারতের অন্য রাজ্যে বাঙালিদের ওপর হামলা হচ্ছে, এবার খোদ কলকাতাতেই হলো। এখনই প্রতিবাদ না করলে এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করা যাবে না।
খুলনা গেজেট/এএজে