মানবসৃষ্ট ‘ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে’র মুখে গাজা, বললেন ডব্লিউএইচও প্রধান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, অপুষ্টিতে ভুগছে শিশুরা। চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো পূর্ণ। অথচ জরুরি খাদ্য সরবরাহের জন্য পর্যাপ্ত সামগ্রী নেই। ত্রাণ সরবরাহের চেইন ভেঙে পড়া ও প্রবেশে বাধার কারণে এই দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠেছে।

ফিলিস্তিনের গাজায় জরুরি ত্রাণ ঢুকতে না দেয়ায় সেখানে মানবসৃষ্ট গণদুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস। খবর রয়টার্সের।

স্থানীয় সময় গত বুধবার জেনেভা থেকে ভার্চুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হন ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক। গাজায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শতাধিক দাতা সংস্থার আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন। এ সব সংস্থার দাবি, গাজার সীমানার বাইরে থাকা বিপুল পরিমাণ খাবার, সুপেয় পানি ও চিকিৎসাসামগ্রী পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি জানি না একে আর কী বলা যায়—এটা গণদুর্ভিক্ষ, এবং এটি মানবসৃষ্ট এবং সেটা অত্যন্ত স্পষ্ট। এই পরিস্থিতি অবরোধের কারণেই হয়েছে।

ইসরায়েল বলেছে, তারা গাজায় সাহায্য ঢুকতে দেয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু এই সাহায্য যেন জঙ্গিদের হাতে না চলে যায় তা নিশ্চিতে ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। তাদের দাবি, যুদ্ধের মধ্যেই তারা গাজায় পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য প্রবেশ করতে দিয়েছে। তবে গাজার এই ২২ লাখ মানুষের দুর্ভোগের জন্য দায়ী হামাস।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এখন পর্যন্ত অন্তত ১১৫ জন ফিলিস্তিনি খাবারের অভাবে মারা গেছেন। তাদের অধিকাংশেরই সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে। এই সময় উপত্যকাজুড়ে নতুন করে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।

ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত অপুষ্টির কারণে অন্তত ২১ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে—এই সংখ্যা ‘বরফের চূড়ামাত্র’, আসল সংখ্যাটা অনেক বড় হতে পারে।

ডব্লিউএইচও আরো জানিয়েছে, অপুষ্টিতে ভুগছে শিশুরা। চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো পূর্ণ। অথচ জরুরি খাদ্য সরবরাহের জন্য পর্যাপ্ত সামগ্রী নেই। ত্রাণ সরবরাহের চেইন ভেঙে পড়া ও প্রবেশে বাধার কারণে এই দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠেছে।

টেড্রোস জানান, জাতিসংঘ ও তাদের সহযোগী সংস্থাগুলো মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে প্রায় ৮০ দিন কোনো খাদ্য সরবরাহ করতে পারেনি। এখন যে সরবরাহ শুরু হয়েছে, সেটিও যথেষ্ট নয়।

ডব্লিউএইচও এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা বলেন, পরিস্থিতি চরম সংকটজনক। তাদের স্ক্রিনিংয়ে দেখা গেছে, প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ মারাত্মক বা মাঝারি মাত্রার অপুষ্টিতে ভুগছেন এবং ২০ শতাংশ পর্যন্ত গর্ভবতী নারীও অপুষ্টির শিকার।

ডব্লিউএইচওর ফিলিস্তিন প্রতিনিধি রিক পেপারকর্ন জানান, শুধুমাত্র জুলাই মাসেই ৫ হাজার ১০০ শিশু অপুষ্টি নিয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৮০০ জন মারাত্মক অপুষ্টিতে ভোগা অবস্থায় ছিল।

খুলনা গেজেট/এসএস

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন