পৃথিবীর পৃষ্ঠতলের গঠন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এর বেশিরভাগ অংশই পানি দিয়ে আবৃত। NASA Earth Observatory এর রিপোর্ট অনুসারে মোট পৃষ্ঠের প্রায় ৭১% হলো পানি এবং বাকি ২৯% হলো স্থলভাগ বা ভূমি। ফলে পানি ও ভূমির অনুপাত দাঁড়ায় প্রায় ৭১:২৯। এই ৭১ ভাগ পানির মধ্যে প্রায় ৯৬.৫% হলো লবণ পানি, যা সমুদ্র ও মহাসাগরে অবস্থিত। বাকি ২.৫% মিঠা পানি, যার অধিকাংশই হিমবাহ ও বরফ স্তরে জমাটবদ্ধ, এবং খুব সামান্য অংশ (<১%) নদী, হ্রদ ও ভূগর্ভস্থ পানির মাধ্যমে মানুষের ব্যবহারের জন্য সহজলভ্য। ৯৬.৫% লবণ পানি পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, বায়ুম-লের কার্বন চক্র, এবং জীববৈচিত্র টিকিয়ে রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। গ্লোবাল কার্বন প্রজেক্ট এর ২০২৩ সালের রিপোর্ট অনুসারে বিশ্বে প্রতিদিন প্রায় ১০০ মিলিয়ন টন (১০ কোটি টন) কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO₂) সমতুল্য গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়। যার বার্ষিক পরিমাণ প্রায় ৩৬-৩৭ গিগাটন CO₂ এর মধ্যে প্রায় ৫০% প্রাকৃতিকভাবে সমুদ্র ও বনভূমি শোষণ করে নেয়, যেমন আমাজন বন বা মহাসাগরের ফাইটোপ্ল্যাংকটন। বাকি ৫০% বায়ুমণ্ডলে নির্গত হয়। অতিরিক্ত এই কার্বণ নির্গমন দীর্ঘ সময় ধরে বায়ুমণ্ডলে রয়ে যাচ্ছে এবং যা বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়াতে প্রধান ভূমিকা রাখছে।
বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂) বা অন্যান্য কার্বন নির্গমনকারী গ্যাস শোষণ করে জমা করে রাখার প্রাকৃতিক যায়গাগুলোকে বলা হয় কার্বন সিংক (Carbon Sink)। যার অন্যতম উদাহারণ হলো-বনভূমি ও গাছপালা -উদ্ভিদ CO₂ গ্রহণ করে খাদ্য তৈরি করে এবং অক্সিজেন ছাড়ে, ফলে বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন কমে। সমুদ্র ও মহাসাগর-সমুদ্র CO₂ শোষণ করে তলদেশে সেডিমেন্টে জমা রাখে এবং সামুদ্রিক জীব খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে। মাটি ((Soil)-অরগানিক মাটিতে প্রচুর পরিমাণে কার্বন সংরক্ষিত থাকে যা দীর্ঘমেয়াদে বায়ুমণ্ডলে ফেরে না। হিমবাহ ও তুষার ঢাকা অঞ্চল-হাজার হাজার বছর ধরে CO₂ ও অন্যান্য গ্যাস বরফ স্তরে আটকে থাকে। ভেজা ভূমি (Wetlands, যেমন হাওর-বাঁওড়)- বায়ুর অক্সিজেন কম থাকায় অজৈব পচন ধীরে হয় এবং কার্বন ধরে রাখে। Amazon Rainforest, Pacific Ocean I Peatlands পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক কার্বন সিংক। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ট্রপিক্যাল বনাঞ্চল হিসেবে অ্যামাজন বন প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে বায়ুমণ্ডলের ভারসাম্য রক্ষা করে।
অপরদিকে, প্রশান্ত মহাসাগর (Pacific Ocean) বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্রভিত্তিক কার্বন সিংক, যা পানির মধ্য দিয়ে CO₂ দ্রবীভূত করে দীর্ঘমেয়াদে সংরক্ষণ করে। এছাড়া, দোআঁশ বনাঞ্চল বা Peatlands প্রতি হেক্টরে সাধারণ গাছের চেয়ে ১০ গুণ বেশি কার্বন ধারণ করতে সক্ষম, যা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে এক অদৃশ্য অথচ শক্তিশালী প্রাকৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলে। Nature Journal (২০২১) এর রিপোর্ট অনুসারে আমাজন রেইনফরেস্ট, কঙ্গো বনাঞ্চল, এবং সুন্দরবনের মতো বনে বছরে ৭-১০ গিগাটন CO₂ শোষণ হয়। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে অ্যামাজন বন প্রতিবছর প্রায় ২ বিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করলেও সাম্প্রতিক বন উজাড় ও দাবানলের কারণে এর কার্বন শোষণ ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। ম্যানগ্রোভ বন ও বনজ ecosystems-এর মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর কার্বন শোষণকারী (carbon sink) হিসেবে বিবেচিত হয়, এই ম্যানগ্রোভ বন ও বনজ ট্রপিক্যাল রেইনফরেস্টের চেয়ে ৩ থেকে ৫ গুণ বেশি কার্বন শোষণ করতে পারে (Donato et al., 2011)। এক কথায় বলা যায় প্রতি বছর বন ও বনজ প্রায় ৯ গিগাটন CO₂ শোষণ করে, যা মানবসৃষ্ট নিঃসরণের প্রায় ২৫%-৩০% (IPCC, ২০২১)।
জলবায়ু বিজ্ঞানীদের মতে, ১৭৫০ সাল থেকে শিল্পবিপ্লব পরবর্তী সময়কাল পর্যন্ত মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের (CO₂) পরিমাণ ৫০ শতাংশের বেশি বেড়ে গেছে (IPCC AR6, ২০২১)। সমুদ্রের পানি এই CO₂ শোষণ করে তা ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন, প্রবালপ্রাচীর এবং অন্যান্য সামুদ্রিক জীববৈচিত্রের মধ্যে সংরক্ষণ করে রাখে। ফলে সমুদ্রের অম্লতা বৃদ্ধি (Ocean Acidification) পাচ্ছে, যা একটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। এতে সমুদ্রের পানি ধীরে ধীরে আরও অম্লীয় (acidic) হয়ে ওঠে, যা প্রবাল, শামুক, ঝিনুক, কাঁকড়া এবং অন্যান্য সামুদ্রিক জীবের জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কার্বন সিংক হলো মাটি। মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর অবশেষ পচে গিয়ে Soil Organic Carbon (SOC) হিসেবে মাটির নিচে জমা হয়। বিশেষ করে ভেজা জমি (wetlands), তৃণভূমি (grasslands), এবং জৈব পদার্থসমৃদ্ধ কৃষি জমিতে এই শোষণ ক্ষমতা বেশি। মাটিতে বর্তমানে আনুমানিক ১৫০০ গিগাটন কার্বন সংরক্ষিত রয়েছে, যা বায়ুম-লে থাকা মোট কার্বনের চেয়ে অনেক বেশি (UNEP, ২০২০)। Wetlands-এ অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে পচন ধীরগতির হয়, ফলে কার্বন দীর্ঘকাল সংরক্ষিত থাকে। পৃথিবীর বরফাচ্ছাদিত পারমাফ্রস্ট অঞ্চলসমূহ, যেমন আর্কটিক, শত-শত বছর ধরে জমাট অবস্থায় বিশাল পরিমাণে কার্বন ধারণ করে রেখেছে। এই বরফ-আবৃত অঞ্চলে আনুমানিক ১৪০০-১৬০০ গিগাটন কার্বন রয়েছে (Tarnocai et al., ২০২৩)। কিন্তু গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের প্রভাবে পারমাফ্রস্ট গলে গিয়ে বিপুল পরিমাণ CO₂ ও মিথেন (CH₄) নির্গত করছে, যা এক ভয়ংকর “ফিডব্যাক লুপ” সৃষ্টি করছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের গতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। (ফিডব্যাক লুপ হলো:- আর্কটিক বরফ গলে গেলে সূরে্যর তাপ বেশি শোষিত হয় ফলে তাপমাত্রা আরও বাড়ে, ফলে আরও বরফ গলে)
একটি ছোট উদাহারণ দেখা যাক, একটি তিমি মাছ যখন মারা যায় এবং তার দেহ সমুদ্রের গভীরে তলিয়ে যায়, তখন সেই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘Whale Fall’। একটি পূর্ণবয়স্ক তিমির দেহে গড়ে ২০-৫০ টন জৈব কার্বন থাকে, যা তলদেশে গিয়ে ধীরে ধীরে পচে এবং দীর্ঘ সময় ধরে কার্বন সংরক্ষণে সাহায্য করে। এই মৃতদেহ প্রায় ১০০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন সামুদ্রিক জীবের জন্য খাদ্য ও আবাসস্থল হিসেবে কাজ করে এবং একটি স্বতন্ত্র বাস্তুতন্ত্র গড়ে তোলে। গবেষণা বলছে, এইভাবে তিমির দেহে থাকা কার্বন বায়ুমণ্ডলে ফেরত না গিয়ে সমুদ্রের তলদেশে আটকে থাকে, যা জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে প্রাকৃতিক কার্বন সিংক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ (Roman & McCarthy, ২০১০)
থার্মোহ্যালাইন সার্কুলেশন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে শোষিত কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂) কে গভীর সমুদ্রে টেনে নিয়ে যায় এবং সেখানে শতাব্দী থেকে সহস্রাব্দকাল পর্যন্ত আটকে রাখে। বিশেষ করে আর্কটিক ও অ্যান্টার্কটিক অঞ্চলে ঠান্ডা ও ঘন লবণাক্ত পানি নিচের দিকে ডুবে যাওয়ার সময় বায়ুম-লীয় CO₂-ও সঙ্গে নিয়ে যায়। এইভাবে কার্বন দীর্ঘ সময়ের জন্য সমুদ্রের তলদেশে সংরক্ষিত থাকে এবং আবার বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসতে শত শত বছর সময় লাগে (Sabine et al., 2004; IPCC, ২০২১)। এটি পৃথিবীর কার্বন চক্রের ভারসাম্য রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক “দীর্ঘমেয়াদী কার্বন সিংক” হিসেবে কাজ করে (Broecker, ১৯৯৭)। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের তাপমাত্রা ও লবণাক্ততায় পরিবর্তন হলে এই সার্কুলেশন ধীরগতির বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী কার্বন সঞ্চয় প্রক্রিয়াকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে (IPCC, ২০২১)। এই কারণে থার্মোহ্যালাইন সার্কুলেশনের সুস্থতা জলবায়ু স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লা নিইনা (La Niña) ও এল নিনো (El Niño) এই দুটি প্রাকৃতিক জলবায়ুগত ঘটনা পৃথিবীর তাপমাত্রা ও কার্বন চক্রে বড় প্রভাব ফেলে। এল নিনো চলাকালে সমুদ্রের উষ্ণতা বেড়ে গিয়ে আমাজন, ইন্দোনেশিয়া ও আফ্রিকার ট্রপিক্যাল বনাঞ্চলে খরা ও দাবানলের প্রবণতা বাড়ায়, যার ফলে গাছের কার্বন শোষণ ক্ষমতা কমে যায় এবং প্রচুর পরিমাণে কার্বন বায়ুম-লে নিঃসরিত হয়। বিপরীতে, লা নিইনা অবস্থায় সমুদ্রের তাপমাত্রা কম থাকে এবং অনেক অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পায়, যা বনাঞ্চলের সবুজায়ন ও গাছের ফটোসিনথেসিস বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, ফলে গ্লোবাল কার্বন শোষণ বাড়ে। এই প্রাকৃতিক চক্রদ্বয় জলবায়ু পরিবর্তনের গতিকে কখনও ত্বরান্বিত করে, কখনও ধীর করে। যেমন ২০১৫-১৬ সালের এল নিনো বিশ্বের কার্বন নির্গমনের অন্যতম রেকর্ড তৈরি করেছিল (WMO, ২০১৬; IPCC, ২০২১)। তাই, লা নিইনা ও এল নিনো শুধু আবহাওয়াই নয়, বরং জলবায়ু সংকট ও কার্বন ভারসাম্যের দিক থেকেও গভীর প্রভাববিস্তারকারী।
বন, সমুদ্র, মাটি ও বরফাচ্ছাদিত অঞ্চল, এই প্রাকৃতিক কার্বন সিংকগুলো পৃথিবীর জলবায়ু ব্যবস্থার ভারসাম্য রক্ষায় নিরব অথচ অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে এরা সম্মিলিতভাবে মানবসৃষ্ট কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂) নির্গমনের প্রায় অর্ধেক অংশ শোষণ করে নেয়, যা আমাদের জলবায়ু ব্যবস্থাকে অবিরত ভেঙে পড়া থেকে রক্ষা করছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে: আমরা কি উন্নয়ন করব, না এই অদৃশ্য রক্ষাকবচগুলোকে রক্ষা করব? উত্তর অবশ্যই সমন্বয়-কার্বন সিংক রক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নকে একসাথে অগ্রসর করতে হবে। বন উজাড়, সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধি, পারমাফ্রস্ট গলন ও মাটির অবক্ষয়, এসবের কারণে এসব সিংকের শোষণক্ষমতা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। ফলে, যদি এই প্রাকৃতিক সিংকগুলো ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে জাতীয় ও বৈশ্বিক অভিযোজন কৌশল ব্যর্থ হতে বাধ্য। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বন, হাওর-বাঁওড়, কৃষিজ মাটি ও ভেজা ভূমির সংরক্ষণ এখন সময়ের দাবি, কারণ এগুলোর মাঝেই আমাদের কার্বন শোষণের প্রধান ভিত্তি নিহিত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, জাতীয় পরিকল্পনায় এই সিংকগুলোকে এখনো প্রান্তিকভাবে বিবেচনা করা হয়, অথচ এগুলো ছাড়া অভিযোজন সম্ভব নয়। তাই এখন সময় হয়েছে একটি সমন্বিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার-যেখানে উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রতিটি ধাপে প্রাকৃতিক কার্বন সিংক রক্ষা ও পুনরুদ্ধারকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। জলবায়ুর এই ‘অদৃশ্য যোদ্ধাদের’ সম্মান ও গুরুত্ব না দিলে জলবায়ু সুবিচার ও অভিযোজন কেবল কাগজে থাকবে, বাস্তবে নয়। জাতীয় জলবায়ু নীতি, বাজেট ও আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়নে কার্বন সিংককে যথাযথ গুরুত্ব না দিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা একটি অস্থিতিশীল ও বিপজ্জনক পৃথিবী রেখে যাব। এখনই সময়, প্রাকৃতিক সিংক রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার, এটাই আমাদের উন্নয়ন ও অস্তিত্বের টেকসই সমাধান।
সময় এসেছে ‘কার্বন সিংক বনাম উন্নয়ন’ দ্বন্দ্ব থেকে বেরিয়ে আসার এবং টেকসই সমঝোতার পথ তৈরির। অর্থাৎ, উন্নয়নের সাথে প্রাকৃতিক সিংকগুলোর রক্ষা ও পুনরুদ্ধারকে একত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বন উজাড়, মাটি ও সমুদ্রের অবক্ষয় বন্ধ করে এবং পারমাফ্রস্ট গলনের ঝুঁকি মোকাবিলা করে পরিবেশ ও অর্থনীতির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। এল নিও ও লা নিইনা’র মতো প্রাকৃতিক জলবায়ু চক্রের প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে নীতিনির্ধারণে আরও বৈজ্ঞানিক ও বস্তুনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গি জরুরি। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু নীতি, জাতীয় বাজেট বরাদ্দ এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়নে কার্বন সিংককে যথাযথ মূল্যায়ন ও গুরুত্ব প্রদান না করলে, আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বিপজ্জনক ও অস্থিতিশীল পৃথিবী রেখে যাবো। আজকের এই কঠিন বাস্তবতার মাঝে প্রাকৃতিক কার্বন সিংক রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়াই আমাদের উন্নয়ন ও অস্তিত্বের টেকসই সমাধান। সর্বপরি উন্নয়ন আর কার্বন সিংকের মধ্যকার বিরোধ দূর করে একটি সমন্বিত ও টেকসই পথের সন্ধান করতে হবে কারণ প্রকৃতির এই অদৃশ্য রক্ষাকবচ ছাড়া জলবায়ু অভিযোজন ব্যর্থ হবে এবং উন্নয়নই ধ্বংসের পথ প্রশস্ত করবে।
খুলনা গেজেট/এনএম