বৃহস্পতিবার । ২রা অক্টোবর, ২০২৫ । ১৭ই আশ্বিন, ১৪৩২

নারীশক্তির আরাধনার পাশে এখনও ধর্ষণের খবর: মিমি

বিনোদন ডেস্ক

পৃথিবীর যেসব দেশ সুরক্ষিত বলে চিহ্নিত, তারা যেভাবে অপরাধীকে নির্মম শাস্তি দিয়ে থাকে, ভারতেও তেমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত বলে মনে করেন টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী।

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে একটি গণমাধ্যমে অভিনেত্রী তার মনের কথা প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, দুর্গার কথা ভাবলেই মনে হয় শক্তিময়ী এক নারী। নাহ! তিনি শুধু একহাতে সংসার সামলাচ্ছেন বলে নয়; তার পূর্ণতার গুণেই এটি মনে হয়। সেই গুণ তাকে সর্বরূপে আলোকিত করে তোলে। তিনি আসেন, প্রকাশ হয় আলোর এবং সূচনা হয় উৎসবের।

অভিনেত্রী বলেন, মায়ের হাতে বহু অস্ত্র আমরা দেখি। মহিষাসুরকে বধ করতে সব দেবতা ধ্যানমগ্ন হয়ে দেবীর আরাধনা করেছিলেন। তাই সব দেবতার শক্তি সঞ্চিত হয়েই দেবীদুর্গার সৃষ্টি। তিনি বলেন, আমরা দেখি অসুরের বুকের ওপরে পা দিয়ে দুষ্টের নাশ করছেন। ‘রক্তবীজ’-এর মতো অসুরকেও মা দুর্গা নিঃশেষ করেন তার ওই অপার শক্তি দিয়ে।

আমাদের সমাজের দিকে যদি তাকাই দেখি, নারীশক্তির আরাধনার পাশে এখনো ধর্ষণের খবর। বাড়ছে বই কমছে না। বিচার পেতে অনেক সময় লাগছে। চোখের সামনে কী কঠোর শাস্তি হতে পারে, সেটি অপরাধীরা দেখুক। সমাজে সব ধরনের অসুরের নিধন হোক। সমাজে সব মহিলাই পাক দুর্গার মতো দৃঢ়তা, শক্তি ও মনের জোর- এটাই কামনা করি। যে পুরুষেরা নারীদের সম্মান করতে পারে না, তাদের ওই রক্তবীজের মতোই যেন দশা হয়।

মিমি চক্রবর্তী বলেন, অসুর নিধনে যমরাজ অস্ত্র দেওয়ার সময় মা দুর্গাকে দিয়েছিলেন গদা, যা ‘কালদণ্ড’ নামেও পরিচিত। এই অস্ত্র আনুগত্য, ভালোবাসা এবং ভক্তির প্রতীক। দুর্গার সেই শক্তির মধ্যে মায়া ও মমতার অনুভব দেখতে পাই।

তিনি বলেন, এই মমত্ববোধের কথা ভাবলে আমার মনে হয়- এই যে দেশের শীর্ষ আদালত মনে করল যে, কুকুরেরা ভয়ের কারণ। এটি কী করে হলো? র্যাফ নামিয়ে তাদের ভ্যানে তুলে ফেলা হচ্ছে। তাহলে এই ধর্ষক, খুনি, যারা মেয়েদের মেরে ফেলছে, ধর্ষণ করছে, চাইলে তাদেরও র্যাফ নামিয়ে তুলে নিতে পারেন না মা দুর্গা!

অভিনেত্রী বলেন, মা দুর্গা যদি আজকের দিনে থাকতেন, যদি এগুলো দেখতে পেতেন, আমার মনে হয় সবার আগে ক্রুরতা, নীচতা, ক্ষমতার আস্ফালন— এসব ধ্বংস করতেন। তিনি বলেন, কুকুরেরা যেহেতু কথা বলতে পারে না, তাই আমরা নিজেরাই ভেবে নিয়েছি যে ওরা ‘থ্রেট’। কিন্তু কীভাবে, সেটি জানি না।

এদিকে ধর্ষক, হেনস্তাকারীরা দিব্যি আছে। তারা জামিন পেয়ে যায়। অথচ অবলা কুকুরকে দত্তক নেওয়াতেই সমস্যা। আদালতকে ধন্যবাদ— অন্তত সেই নির্দেশের বদল হয়েছে। তবে প্রশাসনের এতে আরও উদ্যোগী হওয়া উচিত। অভিনেত্রী বলেন, গা ছাড়া মনোভাবের জন্যই কুকুরের সংখ্যা বেড়েছে। ওদের বন্ধ্যত্বকরণের প্রয়োজন। আজ আমি ওদের ‘স্টেরিলাইজেশন’ করাই, ‘ভ্যাকসিনেশন’ করাই। আমার লোক আছে। কিন্তু এটা তো আমার কাজ নয়; এটা যাদের কাজ, তাদেরই করতে হবে।

শেষে মিমি চক্রবর্তী লিখেছেন, আজ যদি আমার ছেলেমেয়ে অশিক্ষিত হয়, দোষটা কার? আমার ছেলেমেয়ের, না আমার? তখন মনে হয় যে, মা দুর্গা যদি কিছু একটা করেন।




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন