বিএনপি নেই, কাউন্সিলর পদে আ’লীগের প্রতিপক্ষ আ’লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দল থেকে কে বর্জনের কারণে এবার খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অধিকাংশ ওয়ার্ডেই কাউন্সিলর প্রার্থী হননি বিএনপি নেতারা। তবে এসব ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতারাই হয়ে উঠেছেন একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী। নগরীর ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডের ২৬টিতেই আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন।

২০১৮ সালে সর্বশেষ নির্বাচনে কেসিসির ৩১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টিতে আওয়ামী লীগ ও ৯টিতে বিএনপি সমর্থিতরা কাউন্সিলর পদে জয়ী হন। সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডের সাতটিতে আওয়ামী লীগ, একটিতে বিএনপি ও দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পান। তবে আগের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের বিজয়ী ১২ কাউন্সিলরের মধ্যে চারজনই ছিলেন ‘বিদ্রোহী’।

এ বছর অবস্থা আরও খারাপ। কেসিসির ৩১ সাধারণ ওয়ার্ডের মাত্র পাঁচটিতে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী রয়েছেন।

তাঁরা হলেন– ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে এসএম খুরশিদ আহমেদ টোনা, ২৪ নম্বরে জেড এ মাহমুদ ডন, ২৫ নম্বরে আলী আকবর টিপু, ২৬ নম্বরে দলে সদ্য যোগ দেওয়া গোলাম মাওলা শানু এবং ২৭ নম্বরে বর্তমান সেনাপ্রধানের ভাই রফিউদ্দিন আহমেদ রফি।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা এ বিষয়ে বলেন, ১৯, ২৪ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে দল থেকে তিন নেতাকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩৮ ওয়ার্ডে প্রার্থিতা উন্মুক্ত রয়েছে। এখানে একাধিক নেতা প্রার্থী হলেও দলের আপত্তি নেই।

প্রার্থীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ প্রার্থীর চারজনই আওয়ামী লীগের। এখানে বর্তমান কাউন্সিলর আবদুস সালামের পাশাপাশি প্রার্থী হয়েছেন দলের ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ হাসান পিকু, শ্রমিক লীগ নেতা আবজাল জমাদ্দার ও মহানগর যুবলীগের সদস্য কাজী ইব্রাহিম মার্শাল।

১০ নম্বর ওয়ার্ডেও ছয় প্রার্থীর চারজন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের। বর্তমান কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা কাজী তালাত হোসেন কাউট, থানা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. এএসএম সায়েম মিয়া, খালিশপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম প্রিন্স ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ইমাম উদ্দিন আহম্মেদ প্রার্থী হয়েছেন।

১১ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য মুন্সী আবদুল ওয়াদুদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা সাংবাদিক আনোয়ারুল ইসলাম কাজল, যুবলীগ নেতা জামান মোল্লা, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবুল কালাম কাজল ও নাইমুল ইসলাম খালেদ।

১২ নম্বর ওয়ার্ডে সাত প্রার্থীর পাঁচজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত। তাঁরা হলেন– আওয়ামী লীগে সদ্য যোগ দেওয়া বর্তমান কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির, দলের থানা শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক তাহিদুল ইসলাম ঝন্টু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের হোসেন, মিরাজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম বাবু।

১৪ নম্বর ওয়ার্ডে এবার সর্বোচ্চ ১২ জন প্রার্থী হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতা হলেন– ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান জমাদ্দার, সাবেক কাউন্সিলর মফিজুর রহমান পলাশ, মনিরুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা ইয়াসির আরাফাত ইয়াসিন ও শ্রমিক লীগ নেতা নাসির সরদার।

৩০ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মোজাফফর রশিদী রেজার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক শিহাব উদ্দিন, মহানগর কৃষক লীগের আহ্বায়ক এ কে এম শাহজাহান কচি ও দলের নেতা মেহেদী হাসান খোকন।

নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডেও পাঁচ প্রার্থী আওয়ামী লীগের। তাঁরা হলেন– বর্তমান কাউন্সিলর আরিফ হোসেন মিঠু, ওয়ার্ড সভাপতি পিটু মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম তালুকদার, সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও হাসান চান। এ ছাড়া কেসিসির ১, ৫, ১৮, ২০, ২১ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের তিনজন করে এবং ২, ৪, ৬, ৭, ৮, ৯, ১৫, ১৬, ১৭, ১৯, ২২, ২৮ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে দু’জন করে প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

খুলনা গেজেট/হিমালয়




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন