এই প্রথম বারের মত অনুষ্ঠিত হচ্ছে ব্যতিক্রম ধর্মী এসএসসি পরীক্ষা। ২০২৫ সালে বিভাগ নিয়ে মাত্র ১০ মাস পড়ে পরীক্ষার্থীদের অংশ নিতে হচ্ছে। নবম শ্রেণিতে বিভাগ ছিল না। দশম শ্রেণিতে এসে বিভাগ। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী বছরের ৩০ এপ্রিল এসএসসি পরীক্ষার আয়োজন। এতে শিখন ঘাটতিতে পড়তে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, “এ ঘাটতি পূরণ হওয়া সম্ভব নয়। সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শিক্ষা খাতের জন্য অশনি সংকেত বয়ে এনেছে।”
গত বছরে নবম শ্রেণিতে বিভাগ ছিল না। বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগ সম্পর্কে ধারণা ছিল না। ২০২৫ সালে দশম শ্রেণিতে এসে তাদের বিভাগ নিয়ে পড়তে হচ্ছে। দু’বছরের পড়া এ বছরের ১০ মাসের মধ্যে শেষ করতে হচ্ছে। পরীক্ষায় অংশ নেবে প্রায় ১৫ লাখ শিক্ষার্থী।
পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ শুরু হবে ৩১ ডিসেম্বর থেকে। ফরম পূরণ শুরু করতে এর একদিন আগে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে স্কুলগুলোকে নির্বাচনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে বলেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষা হবে, ফল প্রকাশ হবে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে।
দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিভাগ বিভাজন, সিলেবাসও পরিবর্তন হয়েছে। সম্পূর্ণ নতুন পড়া। এছাড়া নতুন সিলেবাসের বই পেতে ফেব্রুয়ারি মাস পার হয়ে যায়। ১০ মাস পড়ে এসএসসি পরীক্ষা দিতে হচ্ছে, এই চিন্তা করে বছরের শুরু থেকে এক ধরনের মানসিক চাপে আছে।
এবার নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা যে বই পড়েছে, দশমে তা সম্পূর্ণ ভিন্ন। পাঠ্যক্রম ও পদ্ধতি আলাদা। তারা নবম শ্রেণিতে বাতিল হওয়া ‘নতুন শিক্ষাক্রম’ পড়েছে। দশমে উঠে পড়ছে পরিমার্জন করা ২০১২ সালে প্রণীত ‘সৃজনশীল শিক্ষাক্রম’। কে কোনো বিভাগ নিয়ে পড়বে তা নির্ধারণ করতে হয় দশম শ্রেণিতে। কারণ বিগত সরকারের সময় চালু করা ‘নতুন শিক্ষাক্রমে’ নবম-দশম শ্রেণির বিভাগ বিভাজন উঠিয়ে দেওয়া হয়। যেটা ২০২৪ সালে চালু ছিল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পট পরিবর্তনের পর ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর নতুন শিক্ষাক্রম ‘বাস্তবায়ন যোগ্য নয়’ ঘোষণা দিয়ে ২০২৫ সাল থেকে বিভাগ বিভাজন ফিরিয়ে আনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
স্কুলের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এএসসি পরীক্ষা নিয়ে আমরা চিন্তিত। হঠাৎ করে সিলেবাস পরিবর্তন, আবার সেই বই পেতেও দেরি হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও পরীক্ষার প্রস্তুতির ব্যাপারে কিছুটা ঘাটতি রয়েই গেছে। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।”
খুলনা গেজেট/এনএম

