শুক্রবার । ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৫ । ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

জেনারেল এরশাদের ক্ষমতার শেষ কয়েক ঘণ্টা

নিজস্ব প্রতি‌বেদক

১৯৯০ সালের মধ্য নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর দেশব্যাপী এরশাদ পদত্যাগের আন্দোলন তীব্র হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার সান্ধ্য আইন জারি করে। ১৫দল, ৭দল ও জামায়াতে ইসলামী তাদের সিদ্ধান্তে অটল ছিল। দাবি ছিল এক দফা। এরশাদ এর পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন।

দেশের কোন শহরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল না। সেনাবাহিনী সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। তৎকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক সভাপতি কাজী জাফর আহমদ, উপ-প্রধানমন্ত্রী শাহ্ মোয়াজ্জেম হোসেন ও মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু প্রেসিডেন্ট এর সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেন। তিন বাহিনীর প্রধান সরকারের নির্দেশে উপেক্ষা করে। মে: জে: (অবঃ) মঞ্জুর রশীদ খান তার আমার সৈনিক জীবন গ্রন্থ এ তথ্য উল্লেখ করেন। তিনি এ গ্রন্থ উল্লেখ করেন জেঃ এরশাদ ৪ ডিসেম্বর পদত্যাগ এর সিদ্ধান্ত নেন। তার একদিন পর বিরোধী দল সিদ্ধান্ত নেয় বিচারপতি শামসুদ্দিন আহমেদকে সরকার প্রধান হিসেবে অধিষ্ঠিত করবেন।

এরপরেও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ক্ষমতায় থাকার নানান কৌশল অবলম্বন করেন। রাষ্ট্রপতির নির্দেশ সত্ত্বেও সংশ্লিষ্টরা সামরিক আইন জারি করতে রাজি হননি। তার পত্নী রওশন এরশাদ তাকে দেশত্যাগের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তখন রাজনৈতিক আবহাওয়া ছিল প্রতিকূলে। রওশন সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম তিনি ও তাঁর স্বামী নিরাপদে আছেন কি না। সামরিক জান্তা শেষ মুহূর্তেও সামরিক আইন জারি করে টিকে থাকতে চেয়েছিলেন। সেনাবাহিনীর প্রধান রাজি হয়নি। এমনকি সেনা প্রধান জেঃ নুরুদ্দিন প্রেসিডেন্ট এর টেলিফোন ধরতে অনীহা প্রকাশ করেন। প্রেসিডেন্ট এরশাদ যাতে কোন যোগাযোগ না করতে পারেন তার সকল ব্যব¯া করা হয়। এক পর্যায়ে ৬ ডিসেম্বর তিনি পদত্যাগে রাজি হন। এক অন্ধকার মেঘ তাকে ঘিরে রাখে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন