জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় প্রচার কাজে ধর্মের ব্যবহার না করাসহ নির্বাচন কমিশনকে ৭ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করে এসব দাবি তুলে ধরেন মহাজোটের নেতারা।
বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব ও মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে বলেন, আমাদের প্রস্তাবের সঙ্গে কমিশন একমত হয়েছেন, জানিয়েছেন আগে থেকে এ নিয়ে কাজ করছেন। সিইসি সৌহার্দ্য পরিবেশে আলোচনা করে গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। আপনার সবাই ভোটকেন্দ্রে যাবেন, আমরাও কথা দিয়েছি নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে চাই।
তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার পর এসে দেখলাম বাসাবাড়ি, মঠ মন্দির ভাঙচুর হয়েছে-এ ধরনের পরিবেশে পরিস্থিতি যেন না হয়, সে বিষয়ে সিইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। সিইসি নিশ্চয়তা দিয়েছেন- এবার কেউ আপনাদের অত্যাচার করতে পারবে না। আমরা শক্তভাবে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
হিন্দু মহাজোটের শঙ্কার কথা তুলে ধরে নির্বাহী মহাসচিব বলেন, আমাদের ভয়ের জায়গাটা অমূলক নয়। দুইটা সময় আমরা খুব উদ্বিগ্ন অবস্থায় থাকি-দুর্গাপূজা আর নির্বাচন। নির্বাচন কখনও হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য সুখকর ছিল না। স্থানীয় সরকার ও সংসদের প্রতিটি নির্বাচনের আগে-পরে, প্রত্যেকটা সরকারের সময় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আঘাত হানা নিয়মিত ব্যাপার হয়েছে। কমিশন বলেছে, অপরাধীরা এবার পার পাবে না।
আমাদের প্রস্তাবের সঙ্গে ইসির ভাবনার পুরোপুরি মিলে গেছে বলে জানিয়েছেন পলাশ কান্তি দে। তিনি বলেন, সিইসি আশ্বস্ত করেছেন, এ দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে যাবেন এবং নিরাপত্তা নিয়ে বাসায় ফিরবেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে শক্তভাবে ব্যবস্থা নেবে ইসি। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটারদের ভয় ভীতি প্রদর্শন ও স্থাপনায় আঘাত হানলে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী শক্তভাবে ব্যবস্থা নেবে।
এই মুখপাত্র জানান, এবার ভোটে পক্ষ-বিপক্ষ তৈরি হবে তুলে ধরে এ বিষয়টি উদ্বেগের সঙ্গে সিইসিকে জানালে সব ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। সিইসিকে উদ্ধৃত করে তিনি জানান, সিইসি বলেছেন, এবারের দুর্গাপূজা অত্যন্ত সুন্দরভাবে হয়েছে কোথাও বিশৃঙ্খলা হয়নি। পরীক্ষামূলকভাবে আমরা দেখেছি। সেখানে যে নিরাপত্তা বলয় ছিল, তার চেয়ে বেশি নিরাপত্তা এবার ভোটে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের জানানো ৭ দফা দাবিগুলো হলো- ভোটের ১০ দিন আগে ও ভোটের ১০ দিন পর পর্যন্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাসাবাড়ি, মঠ মন্দিরের নিরাপত্তা জোরদার; ভোটে সেনা মোতায়েন; সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রচার ও সমাবেশ না করা; ভোটে ধর্মের ব্যবহার না করা; হামলা হলে সেই আসনের ভোট স্থগিত ও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া; সংখ্যালঘু ও নারী ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল করা এবং ভোট কেন্দ্রে যাওয়া ও আসার নির্বিঘ্ন ব্যবস্থা করা।
খুলনা গেজেট/এএজে

