সাফল্যের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এক বার্তায় তিনি এ অভিনন্দন জানান।
চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি দেশে একটি স্থায়ী, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র কাঠামো গঠনের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়। টানা বৈঠক ও আলোচনার মধ্য দিয়ে কমিশন ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরি করে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ আমাদের একটি ঐতিহাসিক অর্জন। এটি শুধু আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পথকে সুগম করবে না, বরং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পথনির্দেশক হিসেবেও কাজ করবে এবং দেশের গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে।
তিনি বলেন, জনগণ এখন এমন কিছু পরিবর্তনের প্রত্যাশায় রয়েছে যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাবে, নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবে এবং দেশে আর কখনো স্বৈরাচারের পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেবে না।
ড. ইউনূস বলেন, সবচেয়ে আশার কথা হলো আমরা নিজেরাই এই সংস্কার প্রক্রিয়াগুলো নিয়ে কাজ করেছি, একমত হয়েছি—বাইরের কেউ আমাদের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়নি। অতীতে বিদেশিরা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিলেও জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে সব রাজনৈতিক দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নিজেদের সংকট নিজেরাই সমাধান করবে। ফলে এবার আমরা বিশ্ববাসীর সামনে একটি ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরতে পেরেছি।
প্রধান উপদেষ্টা দেশের সব রাজনৈতিক দল ও নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই সনদ প্রণয়ন সম্ভব করেছেন, তাদের প্রতি আমি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই এক অনন্য দৃষ্টান্ত। পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন ঐকমত্যের নজির বিরল। ভবিষ্যতে অন্যান্য দেশও সংকটকালে ‘ঐকমত্য কমিশন’ গঠনের কথা বিবেচনা করবে।
প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং বিশেষ সহকারী মনির হায়দারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান, যারা দীর্ঘ আলোচনার পুরো প্রক্রিয়ায় জনগণকে অবহিত রেখেছেন।
ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের গুরুত্ব উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী এই জাতিকে বিভক্ত করতে সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছে। গত ১৫ মাস আমরা তাদের নানা ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করেছি। ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করতে হলে, দেশকে রক্ষায় জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।”
শেষে তিনি বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে আমাদের সামনে মহা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কোনো একক ব্যক্তি, সংগঠন বা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য সকল রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখা জরুরি, যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন।
খুলনা গেজেট/এনএম
								
    
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
