মঙ্গলবার । ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ । ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২

নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

গেজেট প্রতিবেদন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে রাজধানীতে পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত বিশেষ অপরাধ পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ দেশের আপামর জনগণ, রাজনৈতিক দলসহ সর্বমহলের প্রত্যাশা পূরণের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব পুলিশের কাঁধে। সবার প্রত্যাশা বাংলাদেশ পুলিশ সামনের জাতীয় নির্বাচনে এমন এক মানদণ্ড স্থাপন করবে, যা শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রশংসিত হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশসহ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আইনের প্রয়োগ শুধু শক্তি দিয়ে নয়, ন্যায়, নিষ্ঠা ও মানবিকতা দিয়েও প্রতিষ্ঠিত হয়। পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নির্বাচনী মাঠে আপনারা কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী নন; আপনারা জনগণের নিরাপত্তা, আস্থা ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার প্রতীক।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সামনে নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা ও সংলাপ শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষাবলম্বন, বিশেষ সুবিধা প্রদান ও গ্রহণ এবং নিজেকে রাজনৈতিক কর্মী ভাবা যাবে না। ফ্যাসিস্টদের তালিকা পুলিশের কাছে রয়েছে। তারা সমাজ ও রাষ্ট্রে অস্থিরতা সৃষ্টিতে সরাসরি জড়িত। এ ছাড়া অনেক অপরাধী জামিনে ছাড়া পেয়ে অপরাধ করছে। ফ্যাসিস্টদের অপকর্ম, অপপ্রচার, অপরাজনীতি, অপরাধ ও ঝটিকা মিছিল ঠেকাতে গ্রেপ্তার বাড়াতে হবে। তবে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা যাবে না।

ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অধীনস্থ পুলিশ অফিসার ও ট্রুপসদের পেশাদারত্ব, টিম স্পিরিট, শৃঙ্খলা ও মনোবল বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে। অধীনস্থদের মধ্যে যাদের পেশাদারত্ব নেই, শৃঙ্খলা নেই, কমান্ড মানতে চায় না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, জেলা পর্যায়ে ঘনঘন কোর কমিটির সভা আহ্বান করতে হবে। রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা দ্রুত প্রত্যাহার, মিথ্যা মামলা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চকে আরও সক্রিয় করতে হবে। জেলার সব বিষয় নখদর্পণে রাখতে হবে।

থানা থেকে লুট হওয়া বা হারানো বা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান ত্বরান্বিত করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জেলার কেপিআইগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে পুলিশসহ সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। পুলিশের ওপর আক্রমণ কোনো অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না। এ ব্যাপারে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।

উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রতিককালে সাইবার অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে। এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে তরুণ পুলিশ অফিসারদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

পুলিশ মহা-পরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পুলিশের বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, মহানগর পুলিশ কমিশনার ও জেলার পুলিশ সুপাররা অংশ নেন। এ সময় পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন