খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, আব্দুল মালেক ছাত্রজীবনেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। ছাত্র হিসেবে তিনি ছিলেন ইস্ট বেঙ্গল মুসলিম ছাত্র লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন। ভারতীয় উপমহাদেশ স্বাধীনতার আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। আবদুল মালেক উকিল তার রাজনৈতিক জীবনে বহুবার কারাবাস করেছিলেন। ভাষা আন্দোলনের সময় ১১ মার্চ ১৯৪৮ সালে তাকে প্রথম গ্রেফতার করা হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে তাকেও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। পরবর্তীতে ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ এবং ১৯৫৪ সালের জুন মাসে ইস্ট বেঙ্গল পাবলিক সেফটি অধ্যাদেশ অধীনে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু পরিবারের হত্যার পর সেনাবাহিনী তাকে আবারও গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।
তিনি ১৯৫৩ সালে নোয়াখালী সদর মহকুমা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৬২-৬৪ সময়কালে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে ছিলেন এবং ১৯৭২ সালে এখানে থেকে পদত্যাগ করেন। উপরন্তু মালেক উকিল ১৯৫৬, ১৯৬২ এবং ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৬৫ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের নেতা এবং সংযুক্ত প্রাদেশিক পরিষদ ও বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। ছয় দফা আন্দোলন সময় মালেক উকিলকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল।
১৯৬৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সংসদীয় কমিটির নয় সদস্যের মধ্যে একজন হিসেবে নির্বাচিত হন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে লাহোরে অনুষ্ঠিত গোল টেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছিলেন। পরে তারা একসাথে করাচীতে ভ্রমণ যান। ১৯৭০ সালে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নোয়াখালী থেকে সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি তৎকালীন নোয়াখালী-১২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং নতুন মন্ত্রিসভায় তাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৭৫ সালে তিনি জাতীয় সংসদের স্পীকার নির্বাচিত হন।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে তিনি আওয়ামী লীগের হাল ধরে ছিলেন। তাঁর অনন্য অবদানের কারনেই আজ বঙ্গবন্ধু’র আদর্শ বাস্তবায়ন হচ্ছে। সেকারনেই তাঁর মত ত্যাগী নেতাকে অনুসরণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে সকলকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
শনিবার বাদ আসর দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক স্পিকার আবদুল মালেক উকিলের ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। এসময়ে বক্তৃতা করেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা।
সভা পরিচালনা করেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক মো. মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ। স্মরণ সভায় বক্তৃতা করেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও জাতীয় কমিটির সাবেক সদস্য এড. চিশতি সোহরাব হোসেন শিকদার, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. আইয়ুব আলী শেখ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন খান।
এসময়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মল্লিক আবিদ হোসেন কবীর, এড. রজব আলী সরদার, নুর ইসলাম বন্দ, শেখ মো. ফারুক আহমেদ, আবুল কালাম আজাদ কামাল, শ্যামল সিংহ রায়, কাউন্সিলর জেড এ মাহমুদ ডন, অধ্যা. আলমগীর কবীর, প্যানেল মেয়র আলী আকবর টিপু, অধ্যক্ষ শহিদুল হক মিন্টু, মোজাম্মেল হক হাওলাদার, কাউন্সিলর ফকির মো. সাইফুল ইসলাম, তসলিম আহমেদ আশা, অধ্যা. রুনু ইকবাল, মাকসুদ আলম খাজা, মো. মোতালেব মিয়া, রনজিত কুমার ঘোষ, মো. সফিকুর রহমান পলাশ, এস এম আসাদুজ্জামান রাসেল, এ্যাড. আব্দুল লতিফ, কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ আলী, কাউন্সিলর শেখ হাফিজুর রহমান, মোস্তফা কামাল, আব্দুল রউফ মোড়ল, মাহাবুবুল আলম বাবলু মোল্লা, শাহাদাৎ হোসেন মিনা, কাজী এনায়েত আলী আলো, শেখ আব্দুল আজিজ, জিয়াউল ইসলাম মন্টু, ফেরদৌস হোসেন লাবু, শেখ জাহিদ হোসেন, শেখ আবিদ উল্লাহ, আব্দুর রউফ মোড়ল, মো. নুর ইসলাম, মো. জাহিদুল হক, শেখ ইকবাল হোসেন, এমরানুল হক বাবু, হাসান ইফতেখার চালু, শেখ মো. রুহুল আমিন, সরদার আব্দুল হালিম, মো. মোতালেব মিয়া, এ্যাড. শামীম মোশাররফ, মো. জাকির হোসেন, ওয়াহিদুল হক পলাশ, জি এম রেজাউল ইসলাম, সৈয়দ কিসমত আলী, মো. নজরুল ইসলাম, মো. শাজাহান জোমাদ্দার, ইউসুফ আলী খান, জি এম রেজাউল ইসলাম, শারমিন রহমান শিখা, তাসলিমা আক্তার লিমা সহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
স্মরণ সভা শেষে আবদুল মালেক উকিলের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সূত্র : প্রেস বিজ্ঞপ্তি
খুলনা গেজেট/এনএম