ম্যাচজুড়ে আধিপত্য দেখালেও শেষ পর্যন্ত ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরে ইউরো কাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিল স্পেন। জর্জিনহোর শেষ পেনাল্টিটা স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমনকে ফাঁকি দিয়ে জড়াল জালে। সঙ্গে সঙ্গেই ওয়েম্বলিতে হাজির হাজার দশেক ইতালি সমর্থক যেন ফেটে পড়লেন দারুণ উল্লাসে, সঙ্গে ইতালি দলও। স্পেনের বিপক্ষে প্রথম সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে ইতালি ৪-২ গোলে জিতে ফাইনালে উঠলো।
গত ইউরোর মতো এবারও স্পেনকে বিদায় করার পথে ছিল ইতালি। কিন্তু লিড নিয়েও নির্ধারিত সময়ে জিততে পারেনি তারা। আলভারো মোরাতার গোলে সমতা ফেরায় দুইবারের সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। তাতে ৯০ মিনিটের খেলা শেষে ১-১ গোলে প্রথম সেমিফাইনাল গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়েও সমতা ধাকায় গড়ায় টাইব্রেকারে। অবশেষে সেই টাইব্রেকারে স্পেনকে উড়িয়ে ফাইনালে উঠলো ইতালির।
৪ মিনিটে আক্রমণে যায় ইতালি। এমারসনের থ্রু বল ধরে নিকোলো বারেল্লার শট গোলপোস্টে আঘাত করে। গোল হলেও তা গণনা করা হতো না অফসাইডের কারণে। ১৩ মিনিটে দারুণ সুযোগ নষ্ট করে স্পেন। পেদ্রির পাস থেকে ওয়ারজাবালের শট বিপদমুক্ত করেন বোনুচ্চি। দুই মিনিট পর ফেরানের শট গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
২১ মিনিটে গোলপোস্ট অরক্ষিত রেখে বলের দখল হারান উনাই সিমন। স্প্যানিশ অধিনায়ক সার্জিও বুশকেটস রুখে দেন বারেল্লাকে। চার মিনিট পর ওয়ারজাবালের বাড়ানো বল থেকে ওলমো গোলের সুযোগ তৈরি করেন। প্রথমে তার শট বোনুচ্চি ব্লক করে দেন। পরে তার ফিরতি শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান দোনারুমা।
প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে ইনসিগনে ড্রিবল করে দুই স্প্যানিশ খেলোয়াড়কে কাটিয়ে পাস দেন এমারসনকে। আড়াআড়ি শট নেন এমারসন, তা গোলবারে আঘাত করে।
৫২ মিনিটে বুশকেটসের শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। ম্যাচঘড়ির কাটা ঘণ্টাতে পড়তেই চমৎকার কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল করে ইতালি। ওয়ারজাবালের শট সেভ করেই বল মাঝমাঠে পাঠান দোনারুমা। লাপোর্তের ট্যাকলেও বল ধরে রাখে ইতালি, ইম্মোবিলের পাস থেকে বল নিয়ে বাঁকানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন চিয়েসা।
৬৫ মিনিটে কোকের ভাসানো ক্রস দূরের পোস্টে পৌঁছায়। কিন্তু ওয়ারজাবাল সময়মতো পায়ে বল ছোঁয়াতে পারেননি। তাতে আরেকটি দারুণ সুযোগ নষ্ট হয় স্পেনের। তিন মিনিট পর বক্সের ডান দিক থেকে বেরার্দির নিচু শট পা দিয়ে আটকে দেন উনাই সিমন।
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে দ্বিতীয় দল হিসেবে ইতালির পাঁচ জন (চিয়েসা, ইনসিগনে, ইম্মোবিল, লোকাতেল্লি ও পেসিনা) ভিন্ন খেলোয়াড় ২ বা তার বেশি গোল করলেন, যা সবশেষ ঘটেছিল ২০০০ সালে ফ্রান্সে।
৮০ মিনিটে ভুল পাসে আজপিলিকুয়েতা বল দিয়ে দেন ইনসিগনেকে। তিনি বক্সের প্রান্তে পেসিনাকে বল পাঠান, কিন্তু তার শট সোজা চলে যায় সিমনের হাতে। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে লাপোর্তের কাছ থেকে বল পেয়ে ওলমোর সঙ্গে ওয়ান-টু পাসে জায়গা খুঁজে বের করেন মোরাতা, তারপর বাঁ পায়ের নিচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
অতিরিক্ত সময়ে ইতালি গোলের দেখা পেলেও অফসাইডে বাতিল হয়। টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। তাতে লোকাতেল্লি ও ওলমো ব্যর্থ হন। পরের বেলোত্তি, মোরেনো, বোনুচ্চি ও আলবা সফল হন। চতুর্থ শটে বের্নার্দেশচিও দেখা পান গোলের দেখা। তবে মোরাতাকে রুখে দেন দোনারুমা।