যশোরের অভয়নগরে নওয়াপাড়া বাজারে কঠোর বিধি নিষেধ মেনে চললে ও মানা হচ্ছে না গ্রামের বাজার গুলোতে কঠোর বিধি নিষেধ। জানা গেছে, উপজেলার সব থেকে বড় মোকাম শিল্প বন্দর নওয়াপাড়া। এখানে বেশ কয়েকটি বড় বাজার রয়েছে। যশোর খুলনা মহাসড়কের পাশে থাকা বাজার গুলোতে মানা হচ্ছে কঠোর বিধি নিষেধসহ লকডাউন। নওয়াপাড়া, রাজঘাট , তালতলা, আকিজ সিটি, ভাঙ্গাগেট, চেঙ্গুটিয়া, প্রেমবাগবাজারে লোক সমাগম কম দেখা গেছে, সেই সাথে দোকান পাট তেমন খোলা দেখতে পাওয়া যায়নি। শুধু মাত্র ঔষধ, নিত্যপণ্য, কাচাঁবাজার, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে।
কিন্তু গ্রামের ভিতরে যেমন, ধোপাদী নতুন বাজার, সুন্দলীবাজার, পায়রাবাজার, বঊ বাজার, মথরাপুরবাজার, রাঙ্গারহাট বাজার, মাগুরা বাজার, চিয়াডাঙ্গা বাজার, ডহর মশিয়াটিবাজারে মানা হচ্ছে কঠোর বিধি নিষেধ। শুধু শহরে নয় করোনা আক্রান্ত রোগি এখন গ্রামে ও ছড়িয়ে পড়েছে।
সচেতন মহল জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনেক বেশি কঠোর বিধি নিষেধ অরোপ করা হচ্ছে। কিন্তু গ্রামের বাজারের তা মানা হচ্ছে না। পুলিশ চলে গেলে তারা আবার বাজারে ভিড় করছে। প্রশাসনের লোক আসলে পাশে থাকা বাগানে লোকজন পালিয়ে থাকছে। যেই চলে যাচ্ছে সেই আবার বাজারে ভীড় করছে। হাতে বা পকেটে মাস্ক থাকলে ও মুখে মাস্ক নেই।
সরেজমিনে, সুন্দলী বাজার, ধোপাদী বাজার, পায়রাবাজার, বঊ বাজার, মথরাপুরবাজার, রাঙ্গারহাট বাজার, মাগুরা বাজারে দেখা গেছে বিকাল ৩ টা থেকে রাত ১০ পযর্ন্ত মাস্ক বাদে মানুষের আনা গোনা। খোলা হচ্ছে দোকান পাঠ। দুটি শাটারের মধ্যে একটি শাটার ও লাইট বন্দ করে চলচ্ছে কেনা বেচা। প্রশাসনের লোক আসলে ও কিছু সময় বাজার ফাকাঁ দেখা গেছে। প্রশাসনের লোক চলে গেলেই আবার লোক সমাগম বেড়ে যাচ্ছে।
কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, “যে হারে উপজেলায় করানা আক্রান্ত রোগি বাড়ছে এখন শুধু শহরে নয় গ্রামের প্রায় মানুষ এই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে । এতে আমাদের সবাইকে এই কঠোর আদেশ মানতে হবে। তা না হলে আমাদের ক্ষতি আমরাই করছি।”
উল্লেখ্য, এ উপজেলায় এপর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ৩৩ জন। এছাড়াও ২৪ ঘন্টায় ৫০ জনের নমুনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২১ জন। নওয়াপাড়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডে ২ জন, ২ নং ওয়ার্ডে ২ জন, ৩ নং ওয়ার্ডে ২ জন, ৪নং ওয়ার্ডে ২ জন, ৫নং ওয়ার্ডে ৪ জন, ৬ নং ওয়ার্ডে ১৩ জন, ৭ নং ওয়ার্ডে ৩জন, ৮ নং ওয়ার্ডে ১ জন, ৯ নং ওয়ার্ডে ১ জন । ইউনিয়নের প্রেমবাগে ২ জন, চলিশিয়া ১ জন, পায়রায় ২ জন, শ্রীধপুর ২ জন, বাঘুটিয়ায় ২ জনসহ মোট ৩৯ জনের করোনায় আক্রান্ত।
এছাড়াও করোনা আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে ১৭জন, উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা রেফার্ড করা হয়েছে ১৭ জনকে, বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৩৯৯ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ্য হয়েছে ৭৬৯ জন। এ উপজেলায় মোট ৪১৯৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে যার মধ্যে ১২৩৫ জনের করোনা ধরা পড়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় এ উপজেলায় শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং মৃত্যু হার ২ দশমিক ৬ শতাংশ।
সূত্র জানায়, অনেকে আবার করোনা রোগীকে দেখতে আসছেন ফলমূল নিয়ে। এলাকা ঘুরে দেখা যায়নি স্বাস্থ্যবিধি মানার লক্ষণ। অধিকাংশ মানুষের মুখেই ছিল না মাস্ক। শারীরিক দূরত্ব রক্ষাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাইও ছিল না। এমনকি করোনা পরীক্ষার নমুনা দেয়া লোকজনও ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন যত্রতত্র। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ায় থেকে লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। করোনা সংক্রমণের এমন অবস্থায় বিধি নিষেধ আরো জোরদার করেছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা আবাসিক মেডিকেল অফিসার আলীমুর রাজীব বলেন, আমাদের কঠোর বিধি নিষেধ মানতে হবে। তা না হলে ভয়াবহ বিপদের সম্মুখিন হতে হবে।
এব্যপারে অভয়নগর থানার অফিসার ইনর্চাজ(ওসি) শামীম হাসান বলেন, আমাদের টিম বিধি নিষেধ মানতে কঠোর ভাবে কাজ করচ্ছে। প্রশাসনের লোক চলে গেলেই আবার লোক সমাগম বেড়ে যাচ্ছে এ বিষয়টি নিয়ে কথা হলে তিনি আবার বলেন, মোবাইল কোর্টে মাধ্যমে প্রতিরোধ করতে হবে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে থাকে উপজেলা নিবার্হী অফিসার।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি