বন্য প্রাণী পাচারকারী চক্রের কবল থেকে বাঘের তিনটি চামড়া, চারটি মাথা ও ৩১ কেজি হাড় উদ্ধার করাই কাল হয়ে দাড়িয়েছে বাগেরহাটের শরণখোলার বনরক্ষী মোঃ মোস্তফা হাওলাদারের। অব্যাহত হুমকি, মারধর ও মিথ্যা অভিযোগ তুলে ওই বনরক্ষীকে একের পর এক হয়রানি করে চলছে পাচারকারী চক্রটি।
সম্প্রতি চক্রটি বনরক্ষী মোস্তফার বিরুদ্ধে হরিণ শিকারিদের সহায়তা করছে বলে বন বিভাগের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এ ঘটনায় হতাশ হয়ে পরেছেন ওই বনরক্ষী ও তার পরিবার।উপজেলার পশ্চিম খাদা গ্রামের বাসিন্দা সুন্দরবনের কচিখালী অভয়ারণ্য কেন্দ্রের বনরক্ষী মোঃ মোস্তফা হাওলাদারের স্ত্রী বিউটি বেগম বুধবার সকালে শরণখোলা প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের কাছে এসব হয়রানীর অভিযোগ করেন।
বিউটি বেগম বলেন,তার স্বামী মোস্তফা হাওলাদার বন কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে ২০১১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের প্রতিবেশী মেছের বয়াতির পুত্র মোঃ খয়ের মিয়া বয়াতির (৬০) বাড়ি থেকে বাঘের তিনটি চামড়া, চারটি মাথা ও ৩১ কেজি হাড় উদ্ধার করেন।
পরবর্তীতে ওই মামলায় (মামলা নং-সি আর (বন) ০৪/১১) তিনি আদালতে স্বাক্ষী দিলে ২০১৭ সালে খয়ের মিয়া বয়াতির দুই বছরের সাজা হয়ে যায়। এরপর থেকে সাজাপ্রাপ্ত খয়ের মিয়া বয়াতি, তার ভাই জালাল বয়াতি ও ছেলে বাচ্ছু বয়াতির রোষানলে পড়ে বনরক্ষী মোস্তফা হাওলাদার (বিএম-২৭)।
২০১৯ সালে ছুটিতে বাড়িতে আসলে পাচারকারীরা মোস্তফা হাওলাদারকে মারধর করে। এরপর তাকে খুঁজতে দিন রাত বাড়িতে এসে হুমকি-ধামকি ও অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে। এছাড়া তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে ও চাকুরিচ্যুত করতে বন বিভাগের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করে চলছে ওই চক্রটি।
সম্প্রতি তারা মোস্তফার বিরুদ্ধে হরিণ শিকারিদের সহয়তা করার মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাকে সার্কেল থেকে বদলি করার হুমকি দিচ্ছে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে বনরক্ষী মোস্তফা হাওলাদার মুঠোফোনে জানান, তিনি সততার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার বাড়ির এলাকা থেকে বণ্য প্রানী পাচারকারী চক্রের কবল থেকে বাঘের চামড়া, মাথা ও হাড় উদ্ধার করার পর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করে চলছে পাচারকারী চক্রটি।
সংশ্লিষ্ট রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন বলেন, বনরক্ষী মোস্তফা হাওলাদার একজন নিরিহ ভাল মানুষ। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ দেয়া হচ্ছে তা আসলে ভিত্তিহীন।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, বিষয়টি শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তাকে তদন্ত করে রিপোর্ট দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বনরক্ষী মোস্তফার সাথে তার গ্রামের একটি পাচারকারী চক্রের দ্বারা হয়রানি হওয়ার কথা সে আগে থেকে জানিয়ে ছিল।
খুলনা গেজেট/ এস আই