পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট কবি-লেখক-গবেষক-সাহিত্যিক-সম্পাদক নুরুল আমিন বিশ্বাস (৬৬) প্রয়াত। কিছুদিন ক্যানসার রোগে ভুগছিলেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে কলকাতার এক হাসপাতালে মারা যান। রেখে গেলেন স্ত্রী-পুত্র-কন্যা ও গুনমুগ্ধ পাঠককে। বুধবার চোখের জলে বিদায় নিলেন তিনি। মুর্শিদাবাদে তাকে দাফন করা হয়। তার মৃত্যুতে গভীর শোকের ছায়া দুই বাংলায়।
তিনি কর্মজীবনে নৌ-সেনা থেকে অবসর নিয়ে ব্যাংকে চাকরী করেন। এরপর তিনি একটি দৈনিকে ও পরবর্তীতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাপ্তাহিকে কর্মরত ছিলেন। ১৯৫৫ সালের ৪ জুলাই মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের এক গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছিলেন সাহিত্য অনুরাগী। ‘অন্য শাব্দিক’ নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। মাটির মানুষের সঙ্গে ছিল তার হৃদয়ের টান। এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ছুটতে পারতেন। প্রাণশক্তি ছিল দুর্বার। একজন সাহিত্য সংগঠক ছিলেন।
তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল হৃদয় খোঁজে মাটি (১৯৯২), মরুতৃষা(১৯৯৬), পরবাসে যাবে কৃষ্ণচূড়া (১৯৯৬), কালের ফকির, নুরুল আমিনের কাব্যসমগ্র। লিখে যান একটি উপন্যাসও। গবেষণামূলক গ্রন্হগুলি হল মুর্শিদাবাদের লোকসংস্কৃতি ও লোকসাহিত্য, বাঙালি মুসলমান সমাজে লোকধর্ম ও লোকাচার, মোস্তাক হোসেন, ধর্ম-সংস্কৃতি ও মানবতাবাদ, বাংলার মসজিদ ও দরগাহ। এক বছর আগেই তিনি তাঁর কবিতায় বলে গিয়েছিলেন “সময়ের লাল চোখ তাক করে কেঁদে ওঠে প্রিয় মুখ,/মাটির শিকড় আগলে আছে, পা শুধু সম্মোহনে/মৃত্যুহীন প্রাণ সব কেঁদে কেঁদে ওঠে নিজস্ব দর্পণে/এমন বিষাদ মানুষ কখনো শোক সাগরে”। কবি নুরুল আমিন বিশ্বাস সবাইকে শোকসাগরে ভাসিয়ে আজ আলবিদা।
খুলনা গেজেট/এনএম