খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময় বাড়ল ২২ জুন পর্যন্ত
  প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেলেন সাবেক কূটনীতিক সুফিউর
  চট্টগ্রামে চলন্ত অটোরিকশায় ‘পেট্রোল বোমা’ নিক্ষেপ, দুই নারী দগ্ধ

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষির উন্নয়নে খুবি ও পবিপ্রবির সাথে যৌথ গবেষণায় সম্মত ভার্জিনিয়া টেক ইউনিভার্সিটি

খুবি প্রতিনিধি

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষির উন্নয়নের জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া টেক ইউনিভার্সিটির যৌথ গবেষণার সম্ভাব্যতা নিয়ে গতকাল রাত ৮টায় ওয়েবিনারে এক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও এগ্রিকালচারাল স্কুলের ডিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রধান এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া টেক ইউনিভার্সিটি প্রফেসর ও আইপিএম ইনোভেশন ল্যাবের ডিরেক্টর ড. মুনিয়াপ্পান রঙ্গাস্বামি ও তাঁর গবেষক দল এই সমঝোতার বিষয় নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দ্রুত বিস্তার লাভকারী ধ্বংসাত্মক মিলিবাগ ও ফল আর্মি ওয়ার্ম নিয়ে কাজ করার জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সাথে যৌথভাবে কাজ কাজ করতে সম্মত হন। এ গবেষণা কাজের অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করবে ইউএসডিএ বাংলাদেশ মিশন এবং ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন। আর এ গবেষণা সফলভাবে পরিচালনা করার জন্য আইপিএম ইনোভেশন ডিরেক্টর ভার্জিনিয়া টেক ইউনিভার্সিটি খুলনা ও পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক আইপিএম ইনোভেশন ল্যাব তৈরি করতে সহায়তা করবে। মূল গবেষণায় বায়োকন্ট্রোল এজেন্ট প্যারাসাইটিক ইনসেক্ট মাল্টিপ্লিকেশন ও ফিল্ড ইনোকুলেশন করা হবে।

তাদের প্রজেক্ট এর আওতায় তারা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একগুচ্ছ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবেন, পরবর্তীতে এই গবেষণা প্রকল্পের টেকনোলজিক্যাল প্যাটেন্ট কোন প্রাইভেট কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করা হবে যা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষির উন্নয়ন জন্য এক যুগান্তকারী মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। এই যৌথ গবেষণা প্রকল্পের ফেসিলেটেটর ও সংযোগকারী হিসাবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. শিমুল দাস কাজ করছেন। এ প্রকল্পের আওতায় গবেষণাগারে উৎপাদন করা হবে পরজীবী (প্যারাসাইট), আর তা মাঠের ফসলে বা ফল গাছে ছেড়ে দিলে দ্রুত বংশ বিস্তার করে ক্ষতিকর বালাই খেয়ে সাবাড় করবে। ফলে কীটনাশক ছাড়াই ফসল বা বৃক্ষ বালাইমুক্ত হবে। এ ধরনের জৈবিক প্রযুক্তি সমন্বিত পোকা দমনে ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভুট্টা, নারকেল, পেয়ারা, পেপে, লেবু গাছে সাম্প্রতিককালে যে মিলিবাগ ও ফল আর্মি ওয়ার্মের মারাত্মক সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, তা রোধে এই জৈব প্রযুক্তি উপকারে আসবে এবং এসব ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন এই প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সম্ভব সকল ধরনের প্রশাসনিক ও লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদানের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, এই প্রজেক্ট এর মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রান্তিক চাষীরা বিধ্বংসী ফল আর্মি ওয়ার্ম ও মিলিবাগের মারাত্মক সংক্রমণ থেকে জৈবিকভাবে মুক্ত হবেন। সাথে সাথে তিনি এই ধরনের যৌথ গবেষণার উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং ভবিষ্যতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের প্রশাসনিক ও লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে যাবে এই ক্রিয়েটিভ রিসার্চ-ওয়ার্ক বাস্তবায়নের জন্য। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্টোমলজি ডিপার্টমেন্ট ভার্জিনিয়া টেক ইউনিভার্সিটি কাজ করার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত, সেজন্য তিনি হোস্ট খুলনা ইউনিভার্সিটি ও এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন বিশেষভাবে কোলাবোরেশানের সমন্বয়কারী সহযোগী অধ্যাপক ড. শিমুল দাসকে আন্তরিক সাধুবাদ ও অভিনন্দন জানান।

ভার্জিনিয়া টেক ইউনিভার্সিটির গবেষক দলের পক্ষ থেকে আইপিএম ইনোভেশন ল্যাবের ডিরেক্টর ড. মুনিয়াপ্পান ফিচারড স্পিকার হিসাবে তার প্রকল্পের বিস্তারিত পরিকল্পনা জানান এবং তারাও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কাজ করার সুযোগ পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় দুটির উপাচার্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

এসময় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ফ্যাকাল্টির ডিন প্রফেসর মোহাম্মদ আলী ও এন্টোমোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মোঃ মহসিন হোসেন খান তাদের অনুষদ ও বিভাগের গবেষণা কার্যক্রম ও সাফল্য তুলে ধরেন।

 

খুলনা গেজেট/এমএইচবি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!