বাগেরহাট জেলায় সোমবার নতুন করে ২২৫ জনের নমুনা পরিক্ষায় করোনা আক্রান্ত হয়েছে ১১৬ জন। একই দিনে বাগেরহাট ও খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে আরো ৫ জন। জেলায় করোনা শনাক্তের গড় হার ৪৬.৪৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫১.৫৫ শতাংশে দাড়িয়েছে।
নমুনা পরিক্ষায় করোনার উচ্চ সংক্রমণ হার অব্যাহত থাকায় মঙ্গলবার সংক্রমণ হার সর্বনিন্ম শরণখোলায় ৩১. ৫৭ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ রামপালে ১০০ শতাংশে দাড়িয়েছে। জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ৫ জনের মধ্যে বাগেরহাট সদরে ৩ জন, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
সরকারি হিসেবে এ নিয়ে বাগেরহাটে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে জেলা প্রশাসনের লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিন চলছে ঢিলেঢালাভাবে। লোকজন রাস্তায় ভিড় করছে। মানছে না কোন স্বাস্থ্যবিধি। লকডাউনের মধ্যে দূরপাল্লার পরিবহন ও বাস ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহন অবাধে চলাচল করায় করোনা সংক্রমণের লাগাম টেনে রাখা যাচ্ছে না।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মো. মিরাজুল করিম বলেন, বাগেরহাটে স্থানীয়ভাবে লকডাউন দিয়েও সংক্রমণের লাগাম টেনে রাখা যাচ্ছে না। বাগেরহাটের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ছে। দিনদিন যেভাবে রোগীর চাপ বাড়ছে তাতে আমাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। করোনার আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে ৩৭ জন ভর্তি রয়েছেন। গত ২৪ ঘন্টায় এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় ২ জনের নমুনা পরিক্ষায় ২ জনই করোনা আক্রান্ত হয়েছে। রামপালে শনাক্তের হার ১০০ শতাংশ। সদর উপজেলায় ৫৩ জনোর নমুনা পরিক্ষায় ৩৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। বাগেরহাট সদরে করোনা শনাক্তের হার ৬৬.০৩ শতাংশ। মোল্লাহাটে ১৮ জনের নমুনা পরিক্ষায় ১১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। মোল্লাহাটে শনাক্তের হার ৬১. ১১ শতাংশ। চিতলমারীতে ৫ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। চিতলমারীতে শনাক্তের হার ৬০ শতাংশ। কচুয়ায় ৯ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। কচুয়ায় শনাক্তের হার ৫৫.৫৫ শতাংশ। ফকিরহাটে ৫২ জনের নমুনা পরিক্ষায় ২৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। ফকিরহাটে শনাক্তের হার ৫৩. ৮৪ শতাংশ। মোংলায় ৩৪ জনের নমুনা পরিক্ষায় ১৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। মোংলায় শনাক্তের হার ৩৪. ২১ শতাংশ। মোরেলগঞ্জে ৩৩ জনের নমুনা পরিক্ষায় ১৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। মোরেলগঞ্জে শনাক্তের হার ৩৯. ৩৯ শতাংশ। শরণখোলায় ১৯ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। শরণখোলায় শনাক্তের হার ৩১. ৫৭ শতাংশ।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির জানান, বাগেরহাট জেলায় লকডাউনের মধ্যেও করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার জেলায় ২২৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ১১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলায় করোনা শনাক্তের হার বাড়ছে। নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাগেরহাট করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ৩ জন ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২ জনসহ জেলায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩ হাজার ২৯৯ জনে, মৃত্যু হয়েছে ৮৬ জনের। বর্তমানে বাগেরহাটে ৫০ বেডের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ৩৭ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাড়ীতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৯১৬ জন।
খুলনা গেজেট/এনএম