সমান ২২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে থেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মিশনে মাঠে নামে আবাহনী লিমিটেড ও প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। সমীকরণ এমন-যে দল জিতবে, তারাই মাতবে শিরোপা উল্লাসে। এমন ফাইনালের আবহ নিয়ে মাঠে নেমে প্রাইম ব্যাংককে ৮ রানে হারিয়ে হ্যাটট্রিক ও ২২তম ডিপিএল শিরোপা জয়ের স্বাদ পায় আবাহনী লিমিটেড।
আজ (শনিবার) মাঠে গড়ায় ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সুপার লিগ পর্বের শেষ রাউন্ড। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচটি টুর্নামেন্টের অলিখিত ফাইনালে রূপ নেয়। এবার টেলিভিশন পর্দায় দেখা গেছে ডিপিএলের সুপার লিগ পর্ব। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের উদ্যোগে এই পর্বের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। অলিখিত ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে মিরপুরে আজ বাড়তি কোনও আয়োজন চোখে পড়েনি।
করোনাভাইরাসের কারণে গ্যালারিতে দর্শক প্রবেশের অনুমতি না থাকলেও প্রায় গোটা পঞ্চাশেক আকাশী-নীল সমর্থককে দেখা যায় ম্যাচ উপভোগ করতে। বোর্ড কর্তাদের প্রায় সবাই এদিন মাঠে এসে ম্যাচটি উপভোগ করেন ম্যাচটি। উপস্থিত ছিলেন খোদ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও।
শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নামে আবাহনী। তবে শুরুটা ভালো হয়নি তাদের। মুস্তাফিজুর রহমানের করা ইনিসের প্রথম বলেই উইকেটের পিছনে মোহাম্মদ মিঠুনের হাতে ক্যাচ দিয়ে শূন্য হাতে ফেরেন ওপেনার নাঈম শেখ। মুমিন শাহরিয়ারও সুবিধা করতে পারেননি। ১৯ রান করে লিটন দাস আউট হলে দলীয় ৩১ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে আবাহনী।
সেখান থেকে দলকে বিপদমুক্ত করেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৭০ রান যোগ করেন দুজন। দলীয় সর্বোচ্চ ৪৫ রান করে শান্ত রুবেল হোসেনের বলে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। সাজঘরে ফেরার আগে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৪০ বলের ইনিংসটি সাজান ৩টি চার ও ২টি ছয়ের মারে।
পরে সৈকতের ৩৯ বলে ৪০ ও শেষদিকে আফিফ হোসেনের ৭ বলে ১২ এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ১৩ বলে অপরাজিত ২১ রানের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে স্কোর্ড বোর্ডে ১৫০ রানের পুঁজি পায় আবাহনী। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে ২২ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন রুবেল হোসেন। মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসমান ১টি করে উইকেট নেন।
১৫১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় সুবিধা করতে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। শেষ দিকে অবশ্য লড়াই জমিয়ে তুলেছিলেন অভিজ্ঞ অলক কাপালি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি প্রাইম ব্যাংকের। ৮ রানে ম্যাচ হেরে রানার আপের তকমা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়ে তাদের।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের ৩ নম্বর বলেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার রনি তালুকদার। অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় আউট হন ১৩ রান করে। এরপর রাকিবুল ইসলাম, মোহাম্মদ মিঠুন, নাহিদুল ইসলামও ব্যর্থ হন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান রানা, আরাফাত সানিদের সামলাতে।
একপ্রান্ত আগলে রেখে চেষ্টা চালিয়ে যান ওপেনার রুবেল মিয়া। তবে তিনি ৪৩ বলে ৪১ রান করে আউট হলে একশ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে প্রাইম ব্যাংক। পরে নাঈম হাসান ১৯ রান করে আউট হলে লেজের দিকে ব্যাটসম্যানদের নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যান অলক কাপালি। শেষ ২ ওভারে ৩২ রান প্রয়োজন হলে ১৯তম ওভার থেকে ১৬ রান নিয়ে লড়াই জমিয়ে তোলেন তিনি।
শেষ ওভারেও দরকার পড়ে ১৬ রান। তবে মাত্র শহিদুল ইসলামের করা এই ওভার থেকে ৭ রান তুলতে পারেন কাপালি। এতে ১৪২ রানে থামে তাদের ইনিংস। সাইফউদ্দিনের ৪ উইকেট পাওয়ার দিনে ৮ রানে ম্যাচ হারে প্রাইম ব্যাংক। ১৭ বল খেলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন কাপালি। এই ম্যাচ জিতে হ্যাটট্রিক শিরোপার স্বাদ পায় আবাহনী লিমিটেড। সঙ্গে কোচ হিসেবে খালেদ মাহমুদ সুজনেরও এটি টানা তৃতীয় শিরোপা জয়।
খুলনা গেজেট/ এস আই