ক্যান্সার, হেপাটাইটিস ও পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি বিষয়ক এক অ্যাডভোকেসি সভা সোমবার খুলনা নগরীর শামসুর রহমান রোডস্থ স্কুল হেলথ ক্লিনিক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিচালক ডাঃ রাশেদা সুলতানার সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ডাঃ আবু সাঈদ।
সভাপতির বক্তৃতায় ডাঃ রাশেদা সুলতানা বলেন, রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। মানুষ সচেতন হওয়ার ফলেই দেশে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ হ্রাস পেয়েছে। সবাই মিলে কাজ করলে ক্যান্সার ও হেপাটাইটিস প্রতিরোধ সহজ হবে।
অ্যাডভোকেসি সভার মূল প্রবন্ধে জানানো হয়, প্রতিবছর বিশ্বে পানিবাহিত রোগে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয় এবং আট লাখ ৪২ হাজার মানুষ অকালে মারা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে প্রতি তিন জন মানুষের মধ্যে একজন হেপাটাইটিস-বি অথবা হেপাটাইটিস-সি ভাইরাসে আক্রান্ত। কেবল ২০১৫ সালেই বিশ্বে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৩ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। হেপাটাইটিস ভাইরাস রক্তে সংক্রমিত হলে লিভার সিরোসিস এবং শেষ পর্যন্ত লিভার ক্যান্সার হয়ে জীবন নাশ করতে পারে। এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে নবজাতককে হেপাটাইটিস প্রতিরোধ বার্থ ডোজ প্রদান, নিরাপদ রক্ত প্রতিসঞ্চালন, একই সিরিঞ্জ একাধিকবার ব্যবহার না করা, বছরে অন্তত দুইবার রক্তের পরীক্ষা করা, আক্রান্ত হলে পারিবারের সদস্যদের সাথে দূরত্ব বজায় রাখা ও নিরাপদ যৌনচর্চার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। প্রবন্ধে আরও জানানো হয়, বিশ্বে দুইশত ধরণের ক্যান্সার রয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১২ সালে সারা বিশ্বে ৮০ লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। বাংলাদেশে প্রতিবছর দুই লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। এ রোগে মৃত্যুর শতকরা ৩০ ভাগ সহজে প্রতিরোধ যোগ্য।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর লাইফস্টাইল হেলথ এডুকেশন এন্ড প্রমোশনের উদ্যোগে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর আয়োজিত এ্যাডভোকেসি সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন খুলনা বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের পরিচালক মোঃ হাবিবুল হক খান, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ রবিউল হাসান, প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম জাহিদ হোসেন প্রমুখ। সভায় স্বাগত জানান খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের সহকারী পরিচালক ডাঃ ফেরদৌসী আক্তার।
এ্যাডভোকেসি সভায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষক, গণমাধ্যমকর্মী ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। পরে একই স্থানে ডেংগু ও চিকুনগুনিয়া বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম