সুন্দরবনসহ প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে শুধুমাত্র গাছ লাগালে পরিবেশ সুরক্ষা হবে না। পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বাস্তুতন্ত্রের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা সম্ভব। দেশের প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর জমি প্রতি বছর অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ধাক্কা সামলাতে সামলাতে সুন্দরবন ও উপকূলের মানুষ দিশেহারা। পরের ঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস সামলাতে সুন্দরবন এবং উপকূলকে প্রস্তুত করতে হবে।
‘বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার’ প্রতিপাদ্যে শনিবার সকালে মোংলার সুন্দরবন উপকূলের তেলিখালি’র পশুর নদীর পাড়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং পশুর রিভার ওয়াটাকিপার আয়োজিত বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে র্যালী শেষে মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
কৃষিজমি নষ্ট করে পরিবেশ বিরোধী উন্নয়ন কর্মকান্ড বন্ধ এবং জলবায়ু ঝুঁকি থেকে সুন্দরবনসহ উপকূলের মানুষ ও জীববৈচিত্র রক্ষার দাবিতে এ মানববন্ধন এবং র্যালী অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার সকাল ৯ টায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর মোংলার আহ্বায়ক সাংবাদিক মোঃ নূর আলম শেখ। সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাপা নেতা গীতিকার মোল্লা আল মামুন, গীতা হালদার, চিলা কৃষিজমি রক্ষা আন্দোলনের নেতা মোঃ আলম গাজী, বিজন কুমার বৈদ্য, জাকির মোসাল্লী, হেম রায়, আলাউদ্দিন শেখ, গৌর রায় ও ইশারাত ফকির।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুনাফালোভী ব্যবসা-বাণিজ্য ও অপরিকল্পিত শিল্পায়নের কারণে সুন্দরবনের প্রাণ পশুর নদী দখল এবং দূষণ হচ্ছে। এর ফলে সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র হুমকিতে আছে। বক্তারা সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় বনবিনাশী সকল উন্নয়ন প্রকল্প বাতিল করার আহ্বান জানান। বক্তারা সুন্দরবন সংলগ্ন চিলা ইউনিয়নের সাত গ্রামে সাতশো একর কৃষিজমিতে ড্রেজিংয়ের বালু ফেলে কৃষকদের জীবন-জীবিকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলার যে সিদ্ধান্ত মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ নিয়েছে তা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান।
মানববন্ধনের আগে কৃষিজমি, সুন্দরবন ও উপকূলের প্রাণ-প্রকৃতি-নদ-নদী রক্ষা বিষয়ক দাবি লিখিত ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে র্যালী অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে পরিবেশ দিবসে সুন্দরবন সুরক্ষায় পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশন’র চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মনুষ্য সৃষ্ট নানা কারণে সুন্দরবনের একের পর এক বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এ ক্ষয়ক্ষতি থেকে বন রক্ষায় সরকারকে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম