কোন লাভের আশায় নয়। শুধুমাত্র চাষিদের স্বার্থেই কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) প্রকল্প গড়ে তোলা। শেখ রুস্তম আলী ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি চালু করা হয়। এখানে নিয়োজিতরা কেঁচো সার উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। কিন্তু স্থানীয় কৃষি অফিসের অসহযোগিতার কারণে কেঁচো সার প্রকল্পটি এখন বন্ধের পথে। শুক্রবার সকালে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার সুরশাইল খামারবাড়ি বসে এমনটাই জানলেন শেখ রুস্তম আলী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ রাশেদ শেখ পুকুল।
তিনি আরও বলেন, চিতলমারী উপজেলা কৃষি প্রধান এলাকা। সেদিক বিবেচনায় বিষমুক্ত ফসল ও সবজি উৎপাদনে কেঁচো সারের বিকল্প নেই। মাটির গুণাগুণ ঠিক রাখতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে কৃষকরা কেঁচো সার ব্যাপকভাবে ব্যবহারে করতে পারেন। তাই এ অঞ্চলের কৃষকদের কথা ভেবে কেঁচো সার সহজলভ্য ও চাষিদের হাতের নাগালে আনতে আমি ২০২০ সালের প্রথম দিকে সুরশাইল খামার বাড়িতে রুস্তম আলী ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে কেঁচো সার প্রকল্পটি চালু করি। এলাকায় গোবর ও কেঁচোর সমন্বয়ে এ সার তৈরি করতে প্রথম দিকে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের দ্বারা বেশ সমালোচিত হয়েছি। কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে কার্যক্রম চালিয়ে যাই। এ লক্ষে ৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩ ফুট প্রস্থের পৃথক ৯৪টি হাউজ তৈরি করি। প্রতি হাউজে ৫ বস্তা গোবর ও ২ কেঁজি কেঁচো থেকে প্রতি মাসে প্রায় এক মণ কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদিত হয়। সবমিলিয়ে প্রতি মাসে আমার এ খামার থেকে প্রায় ৯৪ মণ কেঁচো সার উৎপাদন হচ্ছে। এ খামারে ছয়জন কাজ করেন। বর্তমানে বিক্রির অভাবে অনেক কেঁচো সার মজুত হয়ে পড়েছে।
এ জন্য স্থানীয় কৃষি অফিসের কর্তাদের কাছে বারবার ধর্ণা দিয়েও তাদের কোন সহযোগিতা পাইনি। কারণ কৃষি কর্তাদের পরামর্শ সহজে চাষিরা গ্রহণ করেন। কৃষি অফিসের লোকজন কেঁচো সার সম্পর্কে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করলে আমার এই বিপুল পরিমাণ কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) নষ্ট হত না। তাই স্থানীয় কৃষি অফিসের অসহযোগিতার কারণে আমার কেঁচো সার প্রকল্পটি এখন বন্ধের পথে।
এ ব্যাপারে কৃষি কাজে অভিজ্ঞ সুরশাইল গ্রামের মোঃ সোহেব সুলতান সানু জানান, কেঁচো সার জমিতে ব্যবহার করে ফসলের ব্যাপক ফলন পাওয়া যায়। এ সার ব্যবহারে জমির গুণাগুণ ঠিক থাকে। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও মাটির সুস্বাস্থ্য রক্ষায় কেঁচো সারের জুড়ি নেই। এ জৈব সার মাটির পানি ধারণ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে জমিতে কম খরচে অধিক ফসল উৎপাদন সম্ভব।
তবে অসহযোগিতার কথা অস্বীকার করে চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, পুকুল সাহেব বলার পর তার ওখানে আমি অফিসের লোক পাঠিয়েছি। কেঁচো সার বাজারজাত করণের কথা বললে আমি আমাদের বিসিআইসি সারের ডিলার ও খুচরা সার বিক্রেতাদের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নিতাম।
খুলনা গেজেট/এনএম