ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবিত জোয়ারের পানিতে ফকিরহাটের দশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভৈরব আর চিত্রা পাড়ের জনপদে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে কৃষি ফসলের জমি। ভেসে গেছে চিংড়ির ঘের-গ্রীষ্মকালীন সবজি সহ ফসলি জমি।
কোথাও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে আবার কোথাও ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে মানুষের দুর্ভোগ। ইয়াসের আকাশের চেয়ে তাই রূপালি চিংড়ির খনি খ্যাত ফকিরহাটের মুলঘর ও নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের বুকচাপা আর্তনাদের আকাশ ভারী হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে পরিদর্শনে জানা গেছে, ফকিরহাটে সদ্য খননকৃত ভৈরবের উপচে পড়া জোয়ারের পানিতে নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের সম্মুখ রাস্তাটি তলিয়ে গেছে। এখানে নলধা, দোহাজারি, জয়পুর গ্রাম সহ মৌভোগের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মানুষের ঘরবাড়ি তলিয়ে যাবার পাশাপাশি ভেসে গেছে চিংড়ির ঘের। ভৈরব তীরের বেড়ীবাঁধের মাটি দিনে রাতে স্বার্থান্বেষী কুচক্রীমহল কতৃক নিজ কাজে সরিয়ে নেবার ফলে ভৈরবের পানি সরাসরি জনপদে ঢুকে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
মুলঘর ইউনিয়নেও ভৈরবের জোয়ার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জোয়ারের পানিতে সোনাখালি সুইচগেট মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। চলাচলের রাস্তার মাটি খালে চলে গেছে। রাজপাট এলাকায় হুহু করে ঢুকছে জোয়ারের পানি।
এদিকে ফলতিতা-বেনেখালি-গোয়ালবাড়ী এলাকায় অসংখ্য মাছের ঘের ডুবে গেছে। চিত্রা পাড়ের পুটিয়া-গুড়গুড়িয়ার বেড়ীবাঁধ ভেঙে বাড়িঘর তলিয়ে যাবার পাশাপাশি মাছের ঘের সহ প্লাবিত হয়েছে পুরো এলাকা। ডুংগার গেট থেকে গোদাড়া গেট পর্যন্ত গোটা জনপদ পানিতে তলিয়ে আছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন পানিতে নিমজ্জিত এলাকা পরিদর্শন করেছে। দুর্যোগ কবলিত মানুষের জন্য যা যা করনীয় তা করতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বিশেষ তৎপর রয়েছে বলে জানাগেছে।
মুলঘর ইউপি চেয়ারম্যান হিটলার গোলদার সার্বক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় অবস্থান করছেন। তিনি জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা বেগম ইয়াস পরবর্তী এই দুঃসময়ে মুলঘর ইউনিয়নের গোটা এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি বেড়ীবাঁধ ও রাস্তাঘাট উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই