‘সুদের সুদতো দিলাম। মাইরও খেলাম। কিন্তু বিচার পেলাম না। তাহলে কি মাইরডা ফ্রি!’ সোমবার (২৪ মে) বিকেলে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদর বাজারের একটি চায়ের দোকানে বসে এমনটাই বলছিলেন কলেজ ছাত্রী মিতালী মন্ডল (২০)।
উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে আক্ষেপের সাথে তিনি আরও বলেন, ফকিরহাট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। চিতলমারী উপজেলার বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের হাড়িয়ার ঘোপ গ্রামে আমাদের বাড়ি। মা পুষ্প মন্ডল, বাবা শেখর মন্ডল ও ভাই আশিষ কুমার মন্ডলকে নিয়ে ৪ সদস্যর পরিবার আমাদের। বাবা কৃষি কাজ করেন।
ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য প্রতিবেশী বিকাশ মন্ডলের কাছ থেকে বাবা মাসিক শতকরা ৫ টাকা হারে ১০ হাজার টাকা সুদে নেন। কিছু দিনের মধ্যে সে টাকা সুদাসলে ২৫ হাজার টাকা হয়। তারমধ্যে বাবা ৮ হাজার টাকা বিকাশ মন্ডলকে পরিশোধ করেন। কিন্তু করোনার কারণে বাকি টাকা দিতে না পারায় গত বৃহস্পতিবার (২০ মে) বিকাশ মন্ডল ও তার চাচাতো ভাই স্কুল শিক্ষক সমির মন্ডল আমাদের বাড়িতে এস অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন।
আমি গালাগালি করতে নিষেধ করায় সমির মন্ডল আমাকে বেধড়ক মারপিট করে গায়ের জামা-কাপড় ছিড়ে ফেলে। বিষয়টি আমরা তাৎক্ষনিক চেয়ারম্যান-মেম্বারকে জানাই। এতদিন পরে সোমবার (২৪ মে) দুপুরে স্থানীয় মেম্বার মোঃ মোহসীন বলেছেন আমাকে মারপিটের বিচার পাবনা। উল্টো সুদের বাকি টাকা অতিশীঘ্র পরিশোধ করতে হবে।
মিতালীর বাবা শেখর মন্ডল ও মা পুষ্প মন্ডল বলেন, শিক্ষক সমির মন্ডল এখন আমাদের নানা হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। কোথাও অভিযোগ দিলে আমাদের মামলায় ফাঁসাবেন বলছেন।
স্কুল শিক্ষক সমির মন্ডল মারপিটের কথা অস্বীকার করে বলেন, বিকাশ মন্ডল ওদের কাছে টাকা পাবে। এ নিয়ে মিতালী ও বিকাশের মধ্যে হাতাহাতি হয়। আমি ওদের ঠেকিয়েছি।
বড়বাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ মোহসীন বলেন, বিকাশ মন্ডল ওদের কাছে টাকা পাবে। বিষয়টি স্থানীয় ভাবে মিটানোর জন্য আমাকে বলা হয়েছে।
বড়বাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মাসুদ সরদার বলেন, মিতালীর বাবার সাথে বিকাশ মন্ডলের লেনদেন রয়েছে। ওরা ঠিকমত টাকা দেয়না।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি